ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কোনও ধারায় কোনও ত্রুটি থাকলে তা সংশোধন করতে কোনও আপত্তি নেই বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের গণমাধ্যম অনেক স্বাধীন।বৃহস্পতিবার (৩ মে) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন আয়োজিত এক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।আইনমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটির খসড়া পাস হওয়ার পর এটির বেশ কয়েকটি ধারা উপধারা নিয়ে বেশ কিছু মহল থেকে অবজারভেশন এসেছে। এরই মধ্যে এডিটরস কাউন্সিল, সাংবাদিকদের সংগঠন বিএফইউজের প্রতিনিধিরা আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। আমি তাদের বলেছি, আইনটি এখন সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে রয়েছে। সেখানে আইনটির সংশোধনী নিয়ে কথা হবে। সেই বৈঠকে এসব কথা বলা উপযুক্ত হবে মনে করে আমি এসব সংগঠনের প্রতিনিধিদের বলেছি,দ আপনাদের ওই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। সেখানে এ বিষয়ে আপনারা কথা বললে ভালো হবে। উনারা এ প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন। এরপর টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাটকোর প্রতিনিধিও আমার সঙ্গে কথা বলে ওই বৈঠকে থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ নিয়ে গত ২২ এপ্রিল মন্ত্রণালয়ের স্ট্যান্ডিং কমিটির একটি মিটিং হয়েছে। সেখানে আমার এ প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা যেহেতু একটি গণতান্ত্রিক সরকার, যেহেতু বিশ্বাস করি আইন জনগণের জন্য। তাই আইনটি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করতে আমাদের কোনও দ্বিধা নেই। যদি প্রমাণিত হয় কিছু কিছু ক্ষেত্রে আইনটির দুর্বলতা আছে, যেখানে পরিবর্তন করা দরকার; সেখানে সংশোধন করতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। আগামী ২২ মে স্ট্যান্ডিং কমিটির যে মিটিং হবে, সেখানে ওই তিনটি সংস্থার প্রতিনিধিরা থাকবেন। সেখানে আইনটি নিয়ে আলাপ-আলোচনা হবে।গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি গণমাধ্যম স্বাধীন। আপনারা যদি অন্যান্য দেশের গণমাধ্যমের সঙ্গে তুলনা করেনÑতাহলে আমি বলবো যে আপনারা নিশ্চয় এই সিদ্ধান্তে উপনীত হবেন যে অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের চেয়ে আমাদের গণমাধ্যম অনেক স্বাধীন।

বিএনপির অভিযোগ তাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে জেলে রাখা হয়েছে, নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্যÑসাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এমন কোনও অভিপ্রায় আমাদের নেই।এর আগে সেমিনারে নারীর অগ্রযাত্রা ও ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের মেয়েরা সরাসরি নির্বাচনে অংশ নিয়ে জাতীয় সংসদসহ সব নির্বাচনে জয়ী হচ্ছে। তারা আগের চেয়ে অনেক এগিয়েছে। সেমিনারে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘বাংলাদেশ সব সময় জনগণের অধিকার নিয়ে কাজ করছে। পৃথিবীর কোনও দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিখুঁত না। কোনও না কোনও ত্রুটি রয়েছে। বাংলাদেশ মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য যে কোনও অবস্থায় কাজ করতে প্রস্তুত। আর রোহিঙ্গা সংকট আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য বড় বাধা।অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক ও সিনিয়র আইন সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হকসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা।