রোজায় বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ বাড়াতে বিকাল ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলো বন্ধ থাকবে।বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ ভবনে চলতি গ্রীষ্ম মৌসুম ও আসন্ন রমজান মাসে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, বিতরণকারী সংস্থা, পেট্রোবাংলা, এফবিসিসিআই ও দোকান মালিক সমিতির প্রতিনিধিদের নিয়ে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বিদ্যুৎ সচিব আহমদ কায়কাউস, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মানসুর মো. ফয়জুল্লাহ, ডেস্কো ও ডিপিডিসির প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া রোজায় দোকানপাট, বিপণি বিতান খোলা রাখার বিষয়ে বিদ্যমান বিধিবিধান অনুসরণ, পিক আওয়ারে রি-রেলিং মিল, ওয়েল্ডিং মেশিন, ওভেন, ইস্ত্রির দোকানসহ বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী সরঞ্জাম বন্ধ রাখা, সুপার মার্কেট, পেট্রোল পাম্প, সিএনজি স্টেশনে অতিরিক্ত বাতি ব্যবহার বন্ধ রাখা, ইফতার ও সেহরির সময় শপিং মল, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের এসির ব্যবহার সীমিত রাখা এবং ইফতার, তারাবি ও সেহেরির সময় লোডশেডিং না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আপনারা পরিমিত আলোকসজ্জা করবেন। এ নিয়ে আমাদের অতটা আপত্তি নাই। কেননা এখন বিদ্যুতের পর্যাপ্ত উৎপাদন রয়েছে। এ মাসে আরও এক হাজার মেগাওয়াট যুক্ত হবে।দেশের বিভিন্ন স্থানে লোডশেডিংয়ের অভিযোগ থাকলেও আসন্ন রমজান মাসে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে বলে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, আশা করছি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাবেন। আইন মতে যেভাবে দোকান চালু রাখা সেভাবে করবেন। আর আলোকসজ্জা যতটুকু কম ব্যবহার করা যায়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন। আমাদের অন্তত বড় করে কোন ‘না’নাই এবার…।এবছর ইলেকশনের বছর, আশা করছি ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো করবেন।এ মাসে জাতীয় গ্রিডে আরো এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হবে জানিয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ এখন যথেষ্ট আছে। আমি কাস্টমার খুঁজতেছি বিদ্যুৎ বিক্রির জন্য। যতো বেশি বিদ্যুৎ দেব, ততো বেশি বিক্রি হবে। রমজানে যাতে কেউ ষড়যন্ত্র করে বিদ্যুতের লাইন বন্ধ না রাখে সে ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।
বিতরণ কোম্পানিগুলোকে লাইন সচল রাখার নির্দেশ দিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ মাসের পর থেকে অবৈধ লাইন কাটা শুরু হবে। এটাতে আপনারা বাধা দিবেন না। আমাকে দিয়ে অবৈধ কাজ হবে না। তিনি বলেন, অনেক মার্কেটের বিদ্যুতের বিল বাকি। আমার কাছে তদবির আসে। আপনারা এটা একটু দেখেন। তিনি বলেন, বিদ্যুতের জন্য এ বছর ২১ বিলিয়ন ডলার লাগছে, আগামী ৫ বছরে ৬০ বিলিয়ন ডলার লাগবে। পুরান ঢাকায় বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সংযোগে সমস্যা হয় জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাব স্টেশন বসানোর জন্য গত এক বছর ধরে চেষ্টা করেও সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে সহযোগিতা পাচ্ছি না। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রি-পেইড মিটার দিচ্ছি। বিল ছাড়া বিদ্যুৎ চলবে না। বিতরণ কোম্পানিকে গ্রাহকদের দলীল নেওয়া বন্ধ করার নির্দেশ দেন প্রতিমন্ত্রী। সরকারি অফিস, মার্কেট এবং বাণিজ্যিক এলাকায় আগে প্রি-পেইড মিটার দেওয়ারও নির্দেশ দেন। বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধানে একটা ইউনিক নম্বর দিয়ে কল সেন্টার করা হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।