নির্বাচন কমিশনার মো. মাহবুব তালুকদার বলেছেন, নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হতে হবে। সবার জন্য সমান সুযোগ না থাকলে নির্বাচন অর্থবহ হবে না। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকলকে আমি নির্দেশ দিচ্ছি, নির্ভয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে নির্বাচনের নিরপেক্ষতা বজায় রাখুন। আইনশৃঙ্খলার ব্যাপারে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি, তারপরও যদি কেউ তা অমান্য করেন তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত মেয়র প্রার্থী, নির্বাচন কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওইসব কথা বলেন। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে ওই সভায় অন্যান্যের মধ্যে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মন্ডল, নির্বাচন সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব মো. মিজানুর রহমান, গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ, আওয়ামীগের মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম, ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী ফজলুর রহমান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী কাজী মো. রুহুল আমীন, বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্ট প্রার্থী মো. জালাল উদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মো. নাসির উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী ফরিদ আহমদ এবং বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের পক্ষে জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক কাজী মাহবুবুল হক গোলাপ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া নির্বাচন সংশ্লিষ্ট র‌্যাব কর্মকর্তা, বিজিবি কর্মকর্তা, আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তা, ফয়ার সার্ভিস, গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন।

নির্বাচন কমিশনার অনুষ্ঠানে উপস্থিত মেয়র প্রার্থীদের স্মরণ করিয়ে বলেন, আপনারা কেউ আচরনবিধি লঙ্ঘন করবেন না। আচরনবিধি লঙ্ঘিত হলে আমরা আপনাদের প্রার্থিতা পর্যন্ত বাতিল করতে পারি। আচরনবিধি লঙ্ঘন করে কেউ নির্বাচনে জয়ী হবেন এমন আশা পরিত্যাগ করুন আপনারা। নির্বাচনে মানি পাওয়ার এবং মাসল পাওয়ার যদি প্রতিহত করতে না পারি তাহলে নির্বাচন কখনই সুষ্ঠু হতে পারে না। এ দুটোকেই আমাদের প্রতিহত করতে হবে। পুলিশদের নির্দেশ দিয়ে ভোটের আগের দিন রাতে ব্যালট পেপার ছিনতাই হবে, ব্যালট বই ছিনিয়ে নিয়ে ছিল মেরে তা বাক্সে ঢুকানো হবে এমন অবস্থায় আপনারা কঠোর ব্যবস্থা নেবেন। নির্বাচনের এই কালচার আর চলতে দেয়া হবে না। নির্বিঘেœ ভোটারদের কেন্দ্রে আসা এবং বেরিয়ে যাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বিশ্ববাসী মনে করে এ নির্বানের মধ্যদিয়ে আগামি জাতীয় নির্বাচনে আমাদের যে কর্মক্ষমতা সে-টা প্রমানিত হবে। শুধু দেশবাসী নয়, সারা বিশ্ব এই নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। এ নির্বাচন শুধু যে গাজীপুরবাসী পর্যবেক্ষণ করছেন তা নয়, সমগ্র বিশ্ববাসী এ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছে। ভোট জনগণের পবিত্র আমানত। এ আমানতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সুষ্ঠু নির্বাচন করে আমরা সকলকে দেখিয়ে যেতে চাই আমরা গণতন্ত্রের পথে আছি এবং থাকব। নির্বাচনে প্রার্থীদের জয়-পরাজয় আছে। কিন্তু গাজীপুর সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু না হলেও কেউ জয়ী হলে গাজীপুরবাসী পরাজিত হবে। আমরা প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন করে গাজীপুরবাসীকে পরাজিত দেখতে চাই না। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একমাত্র উপায় হলো নির্বাচন।