ভারতের কলকাতা শহরে একটি পাতাল রেলে অলিঙ্গন করার অভিযোগে মারধরের শিকার হন এক তরুণ-তরুণী। বিষয়টি ফলাও করে প্রচার করা হয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে। আলোচনা-সমালোচনা হয় সামাজিক মাধ্যমগুলোতেও। ওই জুটিকে এমন হয়রানির প্রতিবাদ হয় ফেসবুক-টুইটারে। এবার ভার্চুয়াল জগত ছেড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠলো বাস্তবেও। স্থানীয় সময় গত মঙ্গল ও বুধবার কলকাতার রাস্তায় সোমবারের ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয় আলিঙ্গনের মাধ্যমে। এ সময় তরুণ-তরুণীরা রেল স্টেশনের বাইরের মানুষদের আলিঙ্গন করেন।

সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়, গত মঙ্গলবার শহরের দমদম মেট্রো স্টেশনের বাইরে ভিন্ন এই প্রতিবাদ প্রদর্শন করেন। পরে বুধবার টালিগঞ্জ স্টেশনের বাইরেও একই ধরনের প্রতিবাদ করা হয়। আলিঙ্গনের ‘অপরাধে’ হয়রানির শিকার ওই জুটির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন লেখিকা তসলিমা নাসরিনও। ‘হতাশাগ্রস্ত কিছু বৃদ্ধই’ এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

এক টুইটাবার্তায় তসলিমা বলেন, ‘ঘৃণার দৃশ্য গ্রহণযোগ্য, কিন্তু ভালোবাসার দৃশ্যকে অশ্লীল বিবেচনা করা হয়।’ এ বিষয়ে কলকাতা মেট্রোর মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি, এবং সিসিটিভি ফুটেজ থেকেও কিছু পাওয়া যাবে না। স্টেশনে অবস্থানরত নিরাপত্তা কর্মকর্তারাও কোনো কিছু জানাননি।’

গত সোমবার কলকাতায় ট্রেনের ভেতরে সবার সামনে আলিঙ্গন করার অভিযোগে এক তরুণ-তরুণী মারধরের শিকার হন। ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ট্রেনের ভিড়ের মধ্যে তারা একে-অপরকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাদের ওই অবস্থান চোখে বাধে অন্য যাত্রীদের। শুরু হয় কটাক্ষ। এতে মুখ খোলেন ওই তরুণ-তরুণীও, জানান প্রতিবাদ।

যাত্রীদের কটু কথার মুখে ওই তরুণ জানান, ট্রেনের ভীড়ের মধ্যে নিজেদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছেন তারা। এতে কারো কোনো সমস্যা আছে কি না জানতে চান তিনি। এতেই চটে যান অন্য যাত্রীরা। দমদম স্টেশনে পৌঁছানো মাত্রই ওই জুটিকে ট্রেন থেকে টেনে-হিঁচড়ে নামিয়ে নেওয়া হয়। তারপর শুরু হয় মারধর। এ সময় সেখানে অনেকেই থাকলেও এগিয়ে আসেনি কেউ। পরে তাদের দুজনকে পাতাল রেল স্টেশন থেকে বের করে দিয়ে শান্তি মেলে জনতার।