একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পদ্ধতি কী হবে, তা দেশের জনগণ নির্ধারণ করবে বলে সরকারকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।শুক্রবার (৪ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম আয়োজিত এক যুব সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিররুদ্ধ অপপ্রচার এবং ষড়যন্ত্র বন্ধের দাবি শীর্ষক এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচনে আসার জন্য কাউকে জোর করবো নাÑ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে খসরু বলেন, নির্বাচন কি কারও ছেলে ও মেয়ের বিয়ে? যে আপনি (ওবায়দুল কাদের) আমন্ত্রণ জানাবেন না ও জোর করবেন না? নির্বাচন দেশের ১৬ কোটি মানুষের অনুষ্ঠান। এই ১৬ কোটি মানুষ নির্বাচনে যোগ দেবে। আপনারা না চাইলেও দেবে। ১৬ কোটি মানুষ নির্ধারণ করবে সেই অনুষ্ঠানটা (নির্বাচন) কিভাবে হবে।তিনি বলেন, সেই অনুষ্ঠান তো আপনি (ওবায়দুল কাদের) নির্ধারণ করতে পারেন না। আপনার ছেলে- মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে কে আসবেন, আর কে আসবেন না সেটা আপনি নির্ধারণ করতে পারেন। সুতরাং বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে দয়া করে এ ধরনের মন্তব্য করবেন না।
আসন্ন গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমাদের অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয়তা আছে বলেই এ নির্বাচনগুলোতে অংশগ্রহণ করেছি। কিন্তু দিনের শেষে আমি বাংলাদেশে কোনও নির্বাচনের লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি না।নির্বাচন করার জন্য কোনও স্পেস নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, নির্বাচন আমার চোখে পড়ছে না। জনগণকে বাইয়ে রেখে ক্ষমতা দখলের একটি নীল-নকশা আমি দেখতে পাচ্ছি। নির্বাচন বলে আমার চোখে কিছু পড়ছে না।বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন,পকেটমার যখন পকেট মারে, তখন আরও চার-পাঁচজন সঙ্গে থাকে। সঙ্গীরা নানা কায়দায় টার্গেটের ব্যক্তিকে ব্যস্ত রাখেন। আর এই সুযোগে পকেটমার তার কাজ সেরে নেয়। নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে একই কায়দায় বিএনপিকে ব্যস্ত রাখছে বর্তমান সরকার। এভাবে অন্যদিকে ব্যস্ত রেখে সরকার পকেট মেরে দিচ্ছে।তিনি বলেন, সরকার ক্ষমতা দখলের জন্য সবগুলো সংস্থাকে ব্যবহার করছে। ইদানীং দুর্নীতি দমন কমিশনও বিভিন্নভাবে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। নির্বাচন আমি চোখে দেখছি না। আমি যেটা দেখছি তা হলো, জনগণকে বাইরে রেখে ক্ষমতা দখলের নীল নকশা। কারণ, দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিভাগীয় কমিশনারকে প্রধান করে সমন্বয় কমিটি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোট ডাকাতির প্রক্রিয়ায় সামান্য যে অংশটুকু অপূর্ণ ছিল এই কমিটির মাধ্যমে সে অংশটুকুও পূরণ করা হয়েছে। বিএনপির এ শীর্ষ নেতা বলেন, নির্বাচন কমিশনের যে আত্মসম্মানবোধ নেই, এই কমিটি তার প্রতিফলন। একটি সাংবিধানিক সংস্থা হিসেবে ‘ফরেন বডি’ থেকে লোকবল এনে নির্বাচন সমন্বয় কমিটির করতে পারে না ইসি।এই কমিটি সংবিধান বিরোধী। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ যদি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়, তবে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু সবই তো নীল নকশা। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা আছে বলেই আমার অংশ নিচ্ছি। তবে নির্বাচন তো কিছু দেখছি না।আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমদ আযম খান, যুগ্মমহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ বক্তব্যে দেন।