নির্বাচনের মাত্র নয় দিন আগে এক আওয়ামী লীগ নেতার রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন তিন মাসের জন্য বন্ধের যে রায় দিয়েছেন সেখানে সরকারের হাত দেখছেন নির্বাচনে লড়াইয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ভূমিকায় থাকাবিএনপির প্রার্থী। রোববার দুপুরে নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণার পর ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, আমি সরকারের এ হেন ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছি। এখানে সরকারি দলের প্রার্থীর নিশ্চিত ভরাডুবি ছিল। এর মধ্যে কোনো সন্দেহের অবকাশ নাই। নির্বাচনে ভরাডুবি নিশ্চিত জেনেই সরকার ভীত হয়ে নির্বাচন স্থগিত করেছে। বিএনপির জয় নিশ্চিত জেনেই সরকার এ কাজ করেছে।

টঙ্গীর আরিচপুরের নিজ বাসভবনে আয়োজিত জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির প্রার্থী বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, সারা জীবন লড়াই করেছি। আমি আবেদন করব নির্বাচন কমিশনের কাছে, অতিসত্ত্বর ১৫ (মে) তারিখেই নির্বাচন অনুষ্ঠান করার জন্য।আমরা সব লড়াই চালিয়ে যাব, আইনি লড়াই এবং জনগণের অধিকার আদায়ের লড়াই- লড়াই শেষ হয় নাই’, যোগ করেন হাসান উদ্দিন সরকার।সংবাদ সম্মেলনে এ সময় বিএনপি প্রার্থীর পাশে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল নোমান, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলনসহ জেলা বিএনপির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।দুপুরে বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ নির্বাচন স্থগিতের রায় দেন। একই সঙ্গে সাভারের শিমুলিয়া এলাকার ছয়টি মৌজাকে নির্বাচনী এলাকার অন্তর্ভুক্ত করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। রুলে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের জবাব দিতে বলা হয়েছে। গাজীপুর সিটির সীমানা নিয়ে ঢাকার সাভার উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান এ বি এম আজাহারুল ইসলাম সুরুজ এ রিট আবেদন করেন। সুরুজ সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম ও জনসংখ্যা বিষয়ক বিষয়ক। তিনি ২০১১ ও ২০১৬ সালের নির্বাচনে পরপর দুবার ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। আগামী ১৫ মে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। একই দিন খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনও হওয়ার কথা রয়েছে। গাজীপুরে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী হলেন তরুণ নেতা জাহাঙ্গীর আলম।গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী অধ্যাপক এম এ মান্নান আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খানকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন। এবার প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলই এ সিটিতে তাদের প্রার্থীতার ক্ষেত্রে পরিবর্তন এনেছে। রায় ঘোষণার পর ইসির পক্ষে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, এখন আমরা রিটের ব্যাপারে শুনেছি। হাইকোর্টের রায় সবাইকে মানতে হবে। সেটা মেনেই গাজীপুরে সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রিটের রায়ের কাগজপত্র দেখে আপিল করা হবে কি না সেটা বিবেচনা করবে ইসি কর্তৃপক্ষ।