স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন,সরকার মাদকের বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি (শূন্য সহনশীলতা) অবলম্বন করেছে।শনিবার রাজধানীতে পূজা উদ্যাপন পরিষদের সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণে পূজা উদ্যাপন পরিষদের দুই দিনের সম্মেলনের আজ ছিল শেষ দিন। আজকের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আসাদুজ্জামান খান।আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী নিহত হওয়ার ঘটনার বিষয়ে প্রশ্ন করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এসব ঘটনার তদন্ত করা হবে। তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে বড় ধরনের মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার না হলেও গত চার দিনে ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন ছয়জন। অভিযানে অংশ নেওয়া বাহিনীর একাধিক সদস্য বলেন, মাদক নির্মূলে এখন বন্দুকযুদ্ধকেই ভরসা বলে মনে করা হচ্ছে।যশোরে গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে তিনজন নিহত হয়। নিহত ব্যক্তিরা মাদক ব্যবসায়ী বলে দাবি করেছে র‌্যাব। কথিত এসব বন্দুকযুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ীদের নিহত হওয়ার ঘটনার মধ্যে আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাদকের বিষয়ে এ মন্তব্য করলেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব ভোটার যাতে নির্বিঘেœ পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন সরকার সেটা নিশ্চিত করবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেন, সরকার এমন কোনো শক্তিকে মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে দেবে না যাতে মানুষ কষ্ট পায় কিংবা অশান্তিতে থাকেন। এ ব্যাপারে সরকার জিরো টলারেন্স অবস্থানে। আগামী নির্বাচনে দেশের মানুষ যাতে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন সেটা আমরা নিশ্চিত করবো।

আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গত প্রায় ১০ বছর ধরে দেশ চালাচ্ছে। এই সময় আমরা সকল ধর্মের মানুষ যাতে শান্তিতে ও নিরাপদে বসবাস করতে পারেন সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি। ‘সামনে জাতীয় নির্বাচন আসছে। একটি কথা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা বিশ্বাস করেন তা বাস্তবায়ন করেন। আমরা যখনই কোনো সাম্প্রদায়িক হয়রানির কথা শুনেছি তখনই ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা এ ধরনের কোনো শক্তিকে মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে দিইনি। পূজা উদযাপন পরিষদের সামাজিক কর্মকান্ডের উদ্যোগের প্রশংসা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি করেছেন, রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এ জন্য ধন্যবাদ। আসলে রোহিঙ্গা সমস্যা আমাদের জন্য একটি নতুন চ্যালেঞ্জ। এদিকে অনুষ্ঠান শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান বলেন, মাদকের ব্যাপারে সরকারের অবস্থান জিরো টলারেন্স। যারা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তাদের ধরতে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। এদের ধরতে গিয়ে তাদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। তবে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে সেটারও তদন্ত হয় এবং হচ্ছে। ঘটুক এর সঙ্গে যদি প্রশাসনের, পুলিশের বা আমাদের কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিও জড়িত থাকে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং হবে। পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জয়ন্ত দাশ দিপুর সভাপতিত্বে অধিবেশনে উপস্থিতি ছিলেন পরিষদের নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত সরকার, স্বপন কুমার সাহা, অ্যাডভোকেট তাপস কুমার পাল, নির্মল রঞ্জন গুহ প্রমুখ। কাউন্সিল অধিবেশনে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত পরিষদ নেতা ও প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।