খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের বিজয়ের পর এবার গাজীপুরের নির্বাচনেও মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের বিজয় সুনিশ্চিত করতে চায় আওয়ামীলীগ। এজন্য দলের অভ্যন্তরীন কোন্দল মিটিয়ে শরীকদলসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে একযোগে নির্বাচনী মাঠে নামতে চাচ্ছে আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ। এ ব্যাপারে হাইকমান্ডের নির্দেশে রবিবার আওয়ামীলীগের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দলের প্রায় ডজন খানেক কেন্দ্রীয় নেতা কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ঘরোয়া বৈঠক করেছেন। বৈঠকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় প্রতীক নৌকার বিজয়কে সুনিশ্চিত করতে ও গাজীপুরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড এবং নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন সাংগঠনিক কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়। বৈঠকে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে গাজীপুর মহানগর এলাকার তিনজন সংসদ সদস্য এবং জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এদিকে খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পর গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে এ ঘরোয়া বৈঠক নিয়ে বিএনপিসহ অন্য দলের প্রতিদ্বন্দ্বি অপর প্রার্থীদের ভাবিয়ে তুলছে। এ নিয়ে এলাকায় নানা জল্পনা কল্পনার সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, রবিবার গাজীপুরে টঙ্গীর নোয়াগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেলের বাসভবনে ঘরোয়াভাবে ওই সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড.আব্দুর রাজ্জাক, কর্ণেল ফারুক খান এমপি, কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, ডা.দিপু মনি এমপি, জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকী এমপি, জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মো. মুহিবুল হাসান নওফেল, খালিদ মাহমুদ চৌধূরী এমপি, তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক মো.আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আখতারুজ্জামান, গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. আজমত উল্লা খান এবং সাধারণ সম্পাদক আওয়ামীলীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী (নৌকা প্রতিক) জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন। তবে স্থানীয় অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বৈঠকস্থলের আশেপাশে উপস্থিত থাকলেও তাদেরকে সভাস্থলে প্রবেশ করতে অনুমতি দেয়া হয়নি। বৈঠকে মেয়র পদে দলীয় প্রতীক নৌকার প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের বিজয়কে সুনিশ্চিত করতে ও গাজীপুরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড এবং নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন সাংগঠনিক কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়। বৈঠকে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সমন্বয়হীনতা এবং সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে না নিয়ে দলীয় মেয়র প্রার্থীর গণসংযোগের বিষয়টিও স্থান পায়। এসময় নেতৃবৃন্দ বিষয়গুলো সম্পর্কে সতর্ক থাকার জন্য মেয়র প্রার্থীকে পরামর্শ দেন।

গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল জানান, রবিবার দুপুরে তার টঙ্গীর বাসভবনে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুসারে আসন্ন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নৌকার বিজয়কে সুনিশ্চিত করতে ও গাজীপুরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড এবং নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন সাংগঠনিক কৌশল নিয়ে এই ঘরোয়া বৈঠকে আলোচনা করা হয়। প্রায় আড়াই ঘন্টা স্থায়ী এ বৈঠকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও মনিটরিং এর জন্য দলীয় কার্যালয়ে একটি অস্থায়ী অফিস স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়।

ওই বৈঠকে অংশ নেয়া গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি এড. আজমত উল্লাহ খান জানান, টঙ্গীতে দলের স্থানীয় সংসদ সদস্যের বাসভবনের ওই ঘরোয়া বৈঠকে গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের আওয়ামীলীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ছাড়া অন্য কেউ উপস্থিত ছিলেন না। তিনি জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও সাংগঠনিক বিভিন্ন দিক ও কৌশল নিয়ে বৈঠকে আলোকপাত করা হয়।

মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, গাজীপুর ও নুরুল ইসলাম, টঙ্গী ॥