যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে উৎক্ষেপণের টানা ১০ দিন পর নিজ কক্ষপথে পৌঁছেছে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১। সোমবার বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএসসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সূত্র জানায়, আগেই বলা হয়েছিল উৎক্ষেপণের ৭ থেকে ১০ দিনের মাথায় বঙ্গবন্ধু-১ তার কক্ষপথে পৌঁছবে। সে হিসেবে ঠিক সময়েই স্যাটেলাইটটি তার কক্ষপথে পৌঁছলো। মহাকাশ পাড়ি দেয়ার পর স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ এর নিয়ন্ত্রণ নেয় যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি এবং কোরিয়ার তিনটি গ্রাউন্ড স্টেশন।

এই তিন স্টেশন থেকে স্যাটেলাইটটিকে নিয়ন্ত্রণ করে এর নিজস্ব কক্ষপথে (১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অরবিটাল স্লট) নিয়ে যাওয়া হয়। এবার কক্ষপথে স্বাভাবিক হতে স্যাটেলাইটটি অন্তত দুই থেকে চারদিন সময় নেবে। সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের স্যাটেলাইট কক্ষপথে তার অবস্থান নিয়েছে। সাধারণত স্থিতিশীল হতে ১২ দিন সময় নেয়। আমরা আশা করছি দুই-চারদিনের মধ্যে এটি স্থিতাবস্থায় থাকবে।’

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্য দিয়ে ও ইকুয়েডরের রাজধানী কিটো শহরের ওপর দিয়ে কক্ষপথ বরাবর এগোচ্ছে বলে স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইটের ইমেজ থেকে জানা গেছে। আর ৩৫ হাজার কিলোমিটার উপরে যাওয়ার পরই ৩৬ হাজার কিলোমিটারে কক্ষপথ শুরু হয়। তবে এখন স্যাটেলাইটের গতি ধীর, কারণ স্থিতাবস্থায় থাকার সময় হচ্ছে। এছাড়া ওয়েবসাইটে স্যাটেলাইটের অগ্রসর হওয়ার বিষয়টিও স্পস্ট দেখা যাচ্ছে।

বিসিএসসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, বাণিজ্যিকভাবে কার্যক্রম শুরু করার আগে আরও কিছু পরীক্ষা চালানো হবে। আগামী তিন মাসের মধ্যে বাণিজ্যিক অপারেশনে শুরু হবে। গাজীপুর গ্রাউন্ড স্টেশনের অপারেশন ইঞ্জিনিয়ার তাজুল ইসলাম এর আগে বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ গ্রাউন্ড স্টেশনে সংকেত পাঠাতে শুরু করেছে। গাজীপুরের জয়দেবপুর ও রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ার গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে স্যাটেলাইটটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পেতে প্রায় দুই মাস সময় লাগবে।

গত ১১ মে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’এর সফলভাবে উৎক্ষেপণ হয়। স্পেসএক্স-এর সর্বাধুনিক রকেট ফ্যালকন-৯ এর মাধ্যমে স্যাটেলাইটটি ১১৯ দশমিক ১ দ্রাঘিমাংশে পৌঁছানোর জন্য এটি উৎক্ষেপণ করা হয়।