প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং আনের সঙ্গে সিঙ্গাপুরে নির্ধারিত শীর্ষ বৈঠকে যোগ দেবেন না। আজ বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউস থেকে জারি করা এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ট্রাম্প বলেন, ১২ জুন সিঙ্গাপুরে বৈঠক করা ঠিক হবে না। তিনি পরে কোনো এক সময় বৈঠকটি হবে বলে কিমকে জানান।

বৈঠকটি সফল করতে উত্তর কোরিয়া নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল। উত্তর কোরিয়া তাদের একমাত্র পারমাণবিক পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত পুঙ্গেইরি কেন্দ্রটি ধ্বংস করার দাবি করেছে । বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের বাছাই করা সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এছাড়া ও পারমাণবিক পরীক্ষা কেন্দ্রটির প্রবেশপথ ধ্বংস করে দেয়ার দাবি করেছে দেশটি। সূত্র : বিবিসি, গার্ডিয়ান

বৃহস্পতিবার সকালের দিকে দুটো বিস্ফোরণ এবং বিকালে ৪ টি বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। উত্তর কোরিয়া তাদের পুঙ্গেইরি পরীক্ষাকেন্দ্রেই সব মিলে ছয়টি পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছিল। দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলের মাউন্ট মানটাপ পর্বতের নিচে খোঁড়া কয়েকটি সুড়ঙ্গ নিয়েই এ কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়েছে। পুঙ্গেইরি পরমাণু পরীক্ষা কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়ার সাক্ষী রাখার জন্য বেশ কয়েকটি দেশ থেকে ২০ জনের মতো সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানায় উত্তর কোরিয়া।তাদের সামনেই পরপর কয়েকটি বিস্ফোরণে প্রকম্পিত হয়ে সুড়ঙ্গগুলো ধসে পড়ে।

পারমানবিক অস্ত্র ধ্বংসের প্রত্যক্ষকারীদের একজন স্কাই নিউজের এশিয়া প্রতিনিধি টম চেশায়ার। তিনি বলেন, ‘পাহাড়ের উপর উঠে আমরা প্রায় ৫০০ মিটার দূর থেকে বিস্ফোরণ দেখেছি। তারা তিন, দুই, এক বলে কাউন্ট ডাউন করছিলো, এরপর প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেলো। চিন্তা করলেই পরিস্থিতিটা উপলব্ধি করতে পারবেন। ধূলিকণা উড়ে আসছিলো, গায়ে তাপ লাগছিলো।’

গত ২৭ এপ্রিল এক ঐতিহাসিক বৈঠকে কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত রাখতে সম্মত হন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসেডন্ট মুন জায়ে ইন। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় যে মে মাসে উত্তর কোরিয়া তাদের পারমানবিক অস্ত্র পরীক্ষাগার বন্ধ করে দেবে। তার অংশ হিসেবেই বেশ কয়েকটি দেশের সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল উত্তর কোরিয়া।

উল্লেখ্য, পারমাণবিক পরীক্ষা কেন্দ্রকে উত্তর কোরিয়ার মূল পারমাণবিক স্থাপনা মনে করা হয়। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পার্বত্য এলাকায় এ পারমাণবিক পরীক্ষা কেন্দ্রের অবস্থান। পুঙ্গেইরে স্থাপনার কাছে মান্টাপ পর্বতের নিচে খনন করা সুড়ঙ্গে বিশেষ ব্যবস্থায় পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো হয়। ২০০৬ সাল থেকে সেখানে ছয়টি পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো হয়েছে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে কয়েক দফা ভূকম্পন হয় ওই পরীক্ষা কেন্দ্রে। ভূতাত্ত্বিকদের বিশ্বাস,এর ফলে পর্বতের অভ্যন্তরীণ একটি অংশ ধসে গেছে।