ঝিনাইদহ জেলার ৪টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানের পর থেকে ছুটি নিয়ে নিখোঁজ রয়েছেন ৪ জন মহিলা চিকিৎসক। তারা কোথায় আছেন সে বিষয়ে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিস এমনকি স্বাস্থ্যমন্ত্রনালয়ে কোন তথ্য নেই। এই সকল নারী চিকিৎসকগণ ছুট নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমালেও এখনো তাদের চাকরী রয়েছে। কেও কেও চার থেকে নয় বছর কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও তারা কোন পদত্যাগপত্র পাঠাননি। ফলে কাগজ কলমে তাদের চাকরী থাকলেও বাস্তবে তারা বছরের পর বছর কর্মস্থলে অনুপস্থিত। এ সব চিকিৎসকরা হলেন, ডাক্তার শাহানারা সুলতানা, ডাক্তার মনিরা শারমিন, ডাক্তার সাদিয়া আফরিন ও ডাক্তার সানজিদা ইয়াসমিন শম্পা। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন দপ্তর সুত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালের ১৭ নভেম্বর তারিখে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার হিসাবে যোগদান করে ডাক্তার শাহানারা সুলতানা। এরপর ২০০৯ সালের ২ মে ছুটি নিয়ে আর কর্মস্থলে ফিরে আসেনি। তিনি কোথায় আছেন সে তথ্যও নেই ঝিনাইদহ স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে। একই ভাবে ২০১২ সালের ৩ জুন কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সহকারী সার্জন হিসাবে যোগদান করে ডাক্তার মনিরা শারমিন। এরপর একই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর তিন দিনের ছুটি নিয়ে আর কর্মস্থলে ফিরে আসেনি। ২০১৪ সালের ১৬ জানুয়ারী হরিণাকুন্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার হিসাবে যোগদান করেন ডাক্তার সাদিয়া আফরিন। যোগদান করে এক মাসের ছুটি নিয়ে অদ্যবধি আর কর্মস্থলে ফিরে আসেননি সাদিয়া। ২০১৪ সালের ২৬ আগষ্ট কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আওতায় বলরামপুর সাব সেন্টারে মেডিকলে অফিসার হিসাবে যোগদান করেন ডাক্তার সানজিদা ইয়াসমিন শম্পা। একদিন কর্মস্থলে থেকে ছুটি নিয়ে চলে যান তিনি। তারপর থেকে কোন কারন ছাড়ায় কর্মস্থলে অনুপস্থিত তিনি। বছরের পর বছর কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও তাদের চাকরী বহাল রেখেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, এ সব নারী চিকিৎসকদের কেও অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, লন্ডন ও আমেরিকাতে স্বামীর সাথে বসবাস করছেন। এ বিষয়ে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডাক্তার রাশেদা সুলতানা জানান, নিদ্দিষ্ট ছুটির মেয়াদ পার হওয়ার পর থেকে ওই সকল ডাক্তারদের স্থায়ি ঠিকানায় বার বার চিঠি দেওয়ার পরও ওই ৪ জন চিকিৎসক তাদের কর্মস্থলে ফিরে আসেনি। এমনকি তারা চিঠির কোন জবাবও দেন নি। বিষয়টি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে অবহিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ধারনা করা হচ্ছে ওই চার ডাক্তার বিদেশে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। যেটি বিধি সম্মত নয়। তিনি আরো জানান তাদের আর চাকুরিতে ফিরে আসার সুযোগ নেই। তাছাড়া চাকুরীচ্যুত করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দীর্ঘ নিয়ম-কানুন থাকার কারনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেরী হচ্ছে।