সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, তারা বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ বাণিজ্যিক ফ্লাইটটি আগামী অক্টোবরে শুরু করতে যাচ্ছে। ১৮ ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের বিরতিহীন এ ফ্লাইটটি যাত্রীদের সিঙ্গাপুর থেকে সরাসরি নিউ ইয়র্ক ভ্রমণের সুযোগ করে দেবে। ‘এ৩৫০-৯০০ইউএলআর’ নামের নতুন একটি বিমান এ ফ্লাইটে ব্যবহার করা হবে যাতে ইকোনমি সিট থাকছে ৯৪টি এবং বিজনেস ক্লাসের সিট সংখ্যা ৬৭টি। সিঙ্গাপুর থেকে নিউ ইয়র্ক পর্যন্ত ফ্লাইটটি ১৫ হাজার ৩০০ কিলোমিটার আকাশসীমা অতিক্রম করবে। বর্তমানে সবচেয়ে দীর্ঘতম ফ্লাইটটি হল কাতার এয়ারওয়েজের দোহা থেকে অকল্যান্ড, দূরত্ব ১৪ হাজার ৫০০ কিলোমিটার।

নতুন এ বিমানটি টানা ১১ হাজার ১৬০ মাইল পাড়ি দেবে; যা একটি মানসম্মত এ৩৫০ মডেলের বিমানের উড্ডয়ন ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত ১ হাজার ৮০০ মাইল বেশি। বিমানটি সাফল্যজনকাবে আকাশে উড্ডয়নে সক্ষম হলে, বিরতহীন বিশ্বের দীর্ঘতম বিমানযাত্রা করে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস নিজেদেরকে ‘ট্রাভেল ক্রাউন’ হিসেবে দাবি করতে পারবে। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস সাধারণত বিমানযাত্রায় গ্যাস-পরিচালিত চার ইঞ্জিন সম্বলিত ‘এ৩৪০-৫০০’ মডেলের বিমান ব্যবহার করে থাকে। ১০০ বিজনেস ক্লাস আসন সম্বলিত এই বিমান বিরতিহীন ৯ হাজার ৫০০ মাইল পথ পাড়ি দিতে পারে। তবে এ বিমানের সার্ভিস অকার্যকর প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৩ সালে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস বিমানটির ফ্লাইট বাতিল করে দেয়।

নতুন মডেলের এ বিমানটি শুরুতে সপ্তাহে ৩ দিন যাত্রা করবে। নতুন মডেলের আরেকটি বিমানের চলাচল শুরু হলে ১৮ অক্টোবর থেকে প্রতিদিন একবার করে যাত্রা করবে। গত ২৩ এপ্রিল বিমানটির পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ৩১ মে থেকে এ বিমানের টিকিট বিক্রি শুরু হবে। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ এরকম ৭টি বিমানের অর্ডার দিয়েছে। টানা ২০ ঘণ্টা যাত্রা করতে গিয়ে যেন যাত্রীরা বিরক্তি বা ভোগান্তির শিকার না হন-সেই দিক বিবেচনা করেও ব্যবস্থা নিয়েছে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস। সব ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকছে নতুন মডেলের বিমানটিতে।

প্রথাগত নির্মাণশৈলীর বাইরে গিয়ে বিমানের মূল কাঠামো নির্মাণে প্রচলিত অ্যালুমিনিয়াম নির্মাণ কৌশলের পরিবর্তে কার্বনের ফাইবারের মতো যৌগিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়েছে। বিমানের কেবিনে থাকবে আবছা অন্ধকারের মতো পরিবেশ থাকবে যাতে করে যাত্রীরা রাতের পরিবেশ পেয়ে নির্বিঘ্নে ঘুমাতে পারেন। দীর্ঘ ২০ ঘণ্টায় ১১ হাজার মাইল পাড়ি দিতে বিমানটির ২৪ হাজার লিটার জ্বালানির প্রয়োজন হবে।