সারা দেশে মাদক নির্মূল অভিযানে দুই জেলায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে আরও তিনজন নিহত হয়েছেন।বৃহস্পতিবার রাতে রাজশাহীর পবা এবং গাজীপুর শহরে নিহত ওই তিনজনই ‘চিহ্নিত মাদক চোরাকারবারী বলে র‌্যাব ও পুলিশের ভাষ্য।মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর পর এ নিয়ে গত ১৩ দিনে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২২ জনে। এদিকে, সারা দেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যে রাজধানীতে মাদক সেবন ও বিক্রির অভিযোগে ৫৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।তাদের কাছে ৫৮ হাজার ৮৪৮টি ইয়াবা, ৩৪ কেজি গাঁজা, হেরোইন ও নেশার ইনজেকশন পাওয়া গেছে বলে মাসুদুর রহমানের ভাষ্য।তিনি জানান, গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে নগরীর সংশ্লিষ্ট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ৩৩টি মামলা করা হয়েছে।

অধিকাংশ ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে, মাদক কারবারিরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দিকে গুলি করায় পাল্টা গুলি করছে পুলিশ বা র‌্যাব। কথিত ওই বন্দুকযুদ্ধের মধ্যেই হতাহতের ঘটনা ঘটছে। কয়েকটি ক্ষেত্রে গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়ার কথা জানিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের মৃত্যু হয়েছে মাদক চোরাকারবারিদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে।তবে তাদের ওই বক্তব্য ও ঘটনার বিবরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। সমালোচনার মধ্যেও মাদকের বিরুদ্ধে এই অভিযান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।রাজশাহী: রাজশাহীতে মাদকবিরোধী অভিযানে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুইজন নিহত হয়েছেন।বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে পবা উপজেলার করমজা গ্রামে কথিত ওই বন্দুকযুদ্ধ হয় বলে র‌্যাব-৫ এর উপ-অধিনায়ক মেজর এসএম আশরাফুল ইসলামের ভাষ্য।নিহত বেলাল হোসেন ও নাজমুল ইসলামের বাড়ি রাজশাহীর পবা উপজেলায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের করা মাদক কারবারিদের তালিকায় তাদের দুজনেরই নাম আছে বলে দাবি করেছে র‌্যাব। মেজর আশরাফুল বলেন, র‌্যাবের একটি দল রাতে করমজা গ্রামে মাদকবিরোধী অভিযানে যায়। এ সময় মাদক ব্যবসায়ীরা র‌্যাবকে লক্ষ করে গুলি চালায়। র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালালে উভয়পক্ষের মধ্যে কয়েক মিনিট গোলাগুলি হয়। এক পর্যায়ে মাদকব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। পরে ওই এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে গুলিবিদ্ধ দুইজনকে পাওয়া যায়।তাদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান র‌্যাব-৫ এর উপ-অধিনায়ক।তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে র‌্যাব বিপুল পরিমাণ’ মাদক দ্রব্য উদ্ধার করেছে। এ অভিযানে তিন র‌্যাব সদস্যও আহত হয়েছেন।

গাজীপুর:গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভাদুন এলাকায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে একজন নিহত হয়েছেন।নিহত কামরুল ইসলাম কামুর বাড়ি টঙ্গীর এরশাদনগর এলাকায়। তার বিরুদ্ধে হত্যা, মাদক চোরাচালানসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত ১৪টি মামলা রয়েছে বলে গাজীপুর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ডেরিক স্টিফেন কুইয়ার ভাষ্য।জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো. আমির হোসেন বলেন, রাত দেড়টার দিকে পুলিশের একটি দল কালীগঞ্জ উপজলার উলুখোলা এলাকায় মাদক উদ্ধার অভিযানে গিয়ে চার হাজার ইয়াবা ও একটি গাড়িসহ কামুকে গ্রেপ্তার করে।তাকে নিয়ে জেলা গোয়েন্দা অফিসে যাওয়ার পথে ভাদুন এলাকায় কামুর সহযোগীরা পুলিশের গাড়িতে গুলি করে। এ সময় কামু পুলিশের গাড়ি থেকে লাফিয়ে পালানোর চেষ্টার সময় গুলিবিদ্ধ হয়।শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কামুকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান ওসি।তিনি বলেন, এ ঘটনায় চার পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। কামুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।