প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশকে সমাজবিরোধী উপাদান থেকে মুক্ত করতে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। বুধবার নিজের সরকারি বাসভবন গণভবনে আইনজীবীদের সম্মানে আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

ইউএনবির খবরে বলা হয়, ইফতার মাহফিলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে। আমরা মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। তিনি আরও বলেন, নাগরিকদের সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায় সরকার। দেশে অবিচার ও অন্যায়ের কোনো স্থান নেই। যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার সরকার সম্পন্ন করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে তা বন্ধ করে দিয়েছিলেন।

বাংলাদেশকে এখন উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে বিবেচনা করা হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধিশালী ও শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই আমরা। তিনি আরও জানান, কানাডায় অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য জি-৭ গ্রুপের দেশগুলো তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, আমি কাল সেখানে যাচ্ছি। তারা বাংলাদেশের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চায়। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতির পেছনে কী জাদু আছে, তা তারা জানতে চায়।

রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্ব ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বাংলাদেশের পাশে আছে। মুক্তিযুদ্ধের সময়ও পুরো বিশ্বকে আমরা পাশে পাইনি। কেউ পাশে ছিল, কেউ ছিল না। কিন্তু এবার আমরা সবাইকে পাশে পেয়েছি। দেশজুড়ে বিভিন্ন বার নির্বাচনে জয়লাভের জন্য সরকার–সমর্থিত আইনজীবীদের অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। সামনের দিনগুলোতে এই জয়ের ধারা অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আপনাদের বিজয়ে বোঝা যায় যে আমরা যদি একতাবদ্ধ থাকি, তবে আমরা জিততে পারি।

বাসসের খবরে বলা হয়, আইনজীবীদের সম্মানে আয়োজিত প্রধানমন্ত্রীর এই ইফতার মাহফিলে দেশের বিভিন্ন স্থানের আইনজীবীরা অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন টেবিল ঘুরে কুশল বিনিময় করেন এবং তাদের খোঁজখবর নেন। ইফতারের আগে দেশ ও জাতির অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ আগস্টে নিহত অন্যান্যের এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম মাওলানা এহসানুল হক মোনাজাত পরিচালনা করেন।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মজুমদার, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহারা খাতুন, আইন সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম, সাবেক বিচারপতি মেসবাহ উদ্দিন, সৈয়দ রেজাউর রহমান, সাংসদ ফজলে নূর তাপস অন্যান্যের মধ্যে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল, ঢাকা জেলা বার অ্যাসোসিয়েশন, রাজশাহী জেলা বার অ্যাসোসিয়েশন, সিলেট জেলা বার অ্যাসোসিয়েশন, গাজীপুর জেলা বার অ্যাসোসিয়েশন, দিনাজপুর জেলা বার অ্যাসোসিয়েশন, শরীয়তপুর জেলা বার অ্যাসোসিয়েশন ও লালমনিরহাট জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।