অ্যাটর্নি জেনারেলের সম্মতি ছাড়া দেশের সর্বোচ্চ আদালত কোনও আদেশ দিচ্ছেন না বলে মনে হচ্ছে সন্দেহ করছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, এ ধরনের অবস্থায় কত দিন আইনজীবীরা সুপ্রিমকোর্টের ওপর আস্থা রাখতে পারবে? মানুষ হয়তো আমাদের ঘৃণায় প্রত্যাখ্যান করে আইন নিজেরাই হাতে তুলে নেবে। আমরা সেই দিনের অপেক্ষায় আছি।খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা কুমিল্লার নাশকতার মামলা সংক্রান্ত হাইকোর্টে শুনানি শেষে রবিবার (১০ জুন) এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।

খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, আদালতে আমরা বলেছিলাম,যে কারণে ট্রাইব্যুনাল (বিচারিক আদালত) তার জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন, সেটা সঠিক না। সেখানে বলা হয়েছে, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়ে আসেনি,সে কারণে জামিনের আবেদন শোনা যায় না। খালেদা জিয়া জেলে। সুতরাং গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির কোনও প্রশ্নই আসে না। এই একই আদেশের বিরুদ্ধে ভিন্ন একটি সিনিয়র বেঞ্চ আদেশ দিয়েছেন যে, বিচারক ভুল পথে অগ্রসর হয়েছেন। ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জামিন আবেদনের সঙ্গে গ্রেফতারি পরোয়ানার কোনও সম্পর্ক নেই। তার অবিলম্বে তার জামিনের আবেদনের শুনানি করা হোক। এই একই ধরনের একটি আদেশ নিয়ে আমরা এই কোর্টে আবেদন করেছি।

খালেদা জিয়ার এই আইনজীবী আরও বলেন, কুমিল্লায় একই ঘটনার ওপরে দু’টি চার্জশিট হয়েছে। তার মধ্যে একটি ৩০২ ধারায় আরেকটি বিশেষ ক্ষমতা আইনে। ৩০২ ধারার মামলায় আমরা জামিন পেয়েছি, যা আপিল বিভাগে মুলতবি (শুনানির জন্য) আছে। তিনি আরও বলেন, গতকাল মোটামুটিভাবে অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাগ্রি করে গিয়েছিলেন যে, আদেশের কপি দেখেননি। কিন্তু আজ তিনি ভিন্নরূপে আবির্ভূত হয়েছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, সরকারের নির্দেশ বা সিদ্ধান্ত হলো, হাইকোর্টের সিনিয়র বেঞ্চটি যে আদেশ দিয়েছেন, ওই আদেশের বিরুদ্ধে আমরা আপিল দায়ের করবো। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আদালতকে বললাম, তিনি কখন (আপিলে) যাবেন, সেটা জানি না। যেহেতু এখনও আপিল দায়ের হয়নি, আপিল থেকে কোনও আদেশ হয়নি, সেহেতু আপনাদের আদেশ দিতে কোনও বাধা নেই। এছাড়া আমরা ট্রাইব্যুনালের যে আদেশের বিরুদ্ধে এসেছি, তা কতটা যুক্তিসঙ্গত আপনারা (বিচারপতিরা) দেখুন। সে অনুযায়ী আদেশ দিন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, আমরা ক্ষুব্ধ, লজ্জিত এই কারনে যে, অ্যাটর্নি জেনারেল যেহেতু আপিল বিভাগে যাবেন, সেহেতু আজ এটা মুলতবি করা হলো। এর অর্থ অ্যাটর্নি জেনারেলের সম্মতি ছাড়া আপাতত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত কোনও আদেশ দিচ্ছেন না।

হতাশা প্রকাশ করে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল সময় চেয়েছেন, আদালত তাকে সময় দিয়েছেন। আবার তিনি সময় চাইবেন, হয়তো আবারও সময় দেবেন। তিনি আরও বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেলের যখন সম্মতি হবে, খালেদা জিয়ার জামিন হবে। আমাদের সেই অপেক্ষায় থাকতে হবে। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচার ব্যবস্থার ওপর মরা আস্থা রাখতে পারছি না বলেই আমার মনে হচ্ছে।খালেদা জিয়া অসুস্থ,এ বিষয়ে আপনারা আইনজীবীরা কোনও আইনি পদেক্ষেপ নেবেন কিনা, জানতে চাইলে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আইনি পদক্ষেপ তো আমরা নিচ্ছিই।