কুষ্টিয়া শহরের ২১নং ওয়ার্ডের লাহিনী মোল্লাপাড়ার মৃত: অছেল কবিরাজের ছেলে কুখ্যাত ডাকাত বাবলু কবিরাজ (ডাকাত বাবলু) দীর্ঘদিন জেল খেটে বের হয়ে আবারও বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। ডাকাতি, চাঁদাবাজি,সরকারি প্রজেক্ট দখল, অস্ত্র বাবসা ও ফেন্সিডিল ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে সে। এতে করে এলাকার শান্তিপ্রিয় মানুষ চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বাবলু ডাকাত ১৬ বছর বয়স থেকে কমিউনিষ্ট পার্টির সাথে জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ১৯৮৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কুষ্টিয়া সদর থানায় বিভিন্ন অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে। এর মধ্যে মাদক আইনে, ডাকাতি, ও অস্ত্র আইনে, একাধিক মামলা রয়েছে। ইতোমধ্যে বহুবার কারাভোগ করেছে সে।

এলাকাবাসী জানায়, ১৯৮৫ সালের পর থেকে বাবলু ডাকাত ফেরারি, ১৯৮৭ সালে থানায় ধরা পড়ে, ১৯৯৮ সালে বাবলু ডাকাত জেল ভেঙ্গে পালায়। ১৯৯৯ সালে ফেন্সিডিল ও অস্ত্র কেসে আটক হয়ে দীর্ঘদিন জেল খাটে। জেল থেকে বের হয়ে ২০০৩ সালে সদর পুলিশ ফাঁড়িতে আবারো ফেন্সিডিল সহ হাতে নাতে গ্রেফতার হয়। এরপর আবার জামিনে বের হয়ে ২০০৭ সালে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটক হয়। জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে ২০০৮-২০১৬ সাল পর্যন্ত এলাকায় ঘাপটি মেরে বসে থাকে। ২০১৭ সাল থেকে স্থানীয় রাজনীতিতে যোগ দিয়ে আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বাবলু ডাকাত। সরকারি নদী, সরকারি প্রজেক্ট দখল, চাঁদাবাজি ও নানা রকম হয়রানিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে লাহিনী এলাকার নিরীহ মানুষ।

সম্প্রতি সে মানুষ হত্যার চুক্তিবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন জায়গায় হুমকি-ধামকি দিয়ে চাঁদা আদায় করছে। কয়েকদিন আগে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (জিকে ক্যানালের) সরকারি প্রজেক্ট দখল করা নিয়ে এলাকার নিরহ মানুষের নামে আম চুরির মামলা দিয়ে হয়রানি করছে সাধারন জনগণকে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেটম্যান রুজদারে বলেন, ডাকাত বাবলু বনবিভাগের কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে আম চুরির মামলা দিয়েছে, কিন্তু এই প্রজেক্ট পানি উন্নয়ন বিভাগের, বনবিভাগ আলাদা বিভাগ, এই পজেক্ট জোর করে ডাকাত বাবলু দখল করেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী পরিচালক (ভূমিওরাজস্ব) বিল্লাল হোসেন বলেন, ২০০৯ সালে তরুন ক্রান্তি ঘোষ নামে এক ভদ্রলোক কৃষি কাজের জন্য এক বছরের ইজারা নেয়। পরে তারা সেই জমির উপর আম গাছ, কাঠাল গাছ, লেবু গাছ লাগায়। তরুন ক্রান্তি ঘোষ পড়ে আর নবায়ন করেন নাই। এর পরে বনবিভাগ জিকে কাছে জমি ইজারা চায়, তখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ঔই জমি নিয়ে কেস চলছে, আমরা আপনাদের দিতে পারি না। পড়ে বাবলু ডাকাত জিকে কাছে আবেদন করে জমি ইজারা নেওয়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড বাবলুর আবেদন বাতিল করে দেয়। পড়ে জিকে নামে বাবলু ডাকাত কোর্টে মামলা করে একবছর মামলা চলার পর বাবলু ডাকাত হেরে যাওয়ার পড়ে এখন জমি পানি উন্নয়ন বোডের,কিন্তু বাবলু ডাকাত জোর করে সরকারী প্রজেক্ট দখল করে খাচ্ছে। আর সাধারন মানুষের কাছে বলছে বনবিভাগ তাকে দেখতে দিয়েছে,কিন্তু এখন এই জমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের। বাবলু ডাকাত বেআইনি ভাবে দখল করেছে।

স্থানীয়দের দাবি, প্রজেক্টের আড়ালে যারা আসেন-তারা আসলেই ফেন্সিডিল এর জন্যই আসেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্ত করলে তা বেরিয়ে আসবে। এদিকে ভুক্তভোগী স্থানীয় নিরীহ মানুষ গুলো ডাকাত বাবলুর অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছেন। তারা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে অভিযোগও করেছেন। তারা ডাকাতের অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে পুলিশ, র‌্যাব,ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।