জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: প্রতি অর্থবছরেই সরকারি হাসপাতালগুলোর জন্য বাজেটে বরাদ্দ দেওয়া হয়ে থাকে। সেই হিসাব অনুযায়ী চলতি অর্থবছরে রোগী প্রতি সরকারের খরচ হচ্ছে ৭৬ হাজার ৪৯৮ টাকা ৯১ পয়সা বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। মঙ্গলবার (১২ জুন) সকালে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে টেবিলে উত্থাপিত মো. মামুনুর রশীদ কিরণের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ তথ্য জানান।এর আগে সকাল পৌনে ১১টা ১৫ মিনিটে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে দিনের কার্যসূচি শুরু হয়। সংসদে মন্ত্রীর দেওয়া তথ্যানুযায়ী বর্তমান বছরে চিকিৎসা সেবা বাবদ সরকারিভাবে রোগী প্রতি ব্যয়ের জন্য অর্থের পরিমাণ ৭৬ হাজার ৩৭৩ টাকা ৯১ পয়সা। আর ওষুধ ও খাবার বাবদ রোগী প্রতি খচর হচ্ছে ১২৫ টাকা। সরকার প্রতিবছরই মাথা পিছু চিকিৎসা সেবার ব্যয় বাড়ছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। দিদারুল আলমের অপর এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, দেশে এই মুহুর্তে ৯৫ হাজার ৮৩৬ জন চিকিৎসক রয়েছেন। এরমধ্যে সারাদেশে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংখ্যা ২৮ হাজার ৭৪১ জন। এসব চিকিৎসকের মধ্যে বিএমডিসির রেজিস্ট্রার্ডভুক্ত ৮৭ হাজার ৩২১ জন, বিডিএস রেজিস্ট্রার্ড ৮ হাজার ৫১৫ জন। এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসহ অন্যান্য অনুমোদিত মেডিকেল কলেজে প্রতিবছর ২ হাজার ৮৪৬ জন বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কোর্সে চিকিৎসক ভর্তি হচ্ছেন।

এদিকে, লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। মঙ্গলবার ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ দাবি জানান।তারেক রহমানের সঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের লন্ডনে বৈঠকের সমালোচনা করে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামির সঙ্গে শুধু বৈঠকই করেননি, ভুরিভোজও করেছেন। ওখানে বসে কী ষড়যন্ত্র করছেন, তা খতিয়ে দেখতে হবে। একজন সাজাপ্রাপ্ত পালাতক আসামির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার আইনের ব্যত্যয় ঘটে কিনা, সেটা খতিয়ে দেখে আইনের আওতায় আনতে হবে।খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আগামী নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন, সেদিকে মনোযোগী না হয়ে বিএনপি এখন বিদেশিদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছে। তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছে।

ইসলামের কল্যাণে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আল্লাহর নাম নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, এ দেশকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ। এদেশে ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন বঙ্গবন্ধু। তার হাত ধরেই বিশ্ব ইসলামী সংস্থা ওআইসির সদস্য পদ লাভ করে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পরপরই এদেশে মদ-জুয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারও ইসলাম ধর্মের প্রচারে সচেষ্ট। এদেশে একটা সময় মসজিদভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকার আবার তা চালু করেছে। আওয়ামী লীগ সব সময় কোরআন-সুন্নাহবিরোধী আইন পাসের বিপক্ষে। আওয়ামী লীগই মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড পুনর্গঠন করেছে, আলেমদের দীর্ঘ দিনের দাবি ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। ঈদে মিলাদুন্নবী, শবে-কদর, শবে-বরাত উপলক্ষে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে। ইসলাম প্রচারে তাবলীগ জামায়াতের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। মাদ্রাসা শিক্ষাকে আধুনিক করেছে আওয়ামী লীগ। কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের প্রচলিত সনদের সমমানের মর্যাদাও দিয়েছে বর্তমান সরকার। ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে।উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যদের ধন্যবাদ জানান খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। দ্বিতীয় পদ্মাসেতুতে উত্তরবঙ্গকে সংযুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে ভবিষ্যত উন্নয়নে উত্তরবঙ্গকে আরও বেশি সম্পৃক্ত করার দাবি জানান তিনি। পাশাপাশি মাদকের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানকে প্রজন্ম রক্ষার অভিযান বলে মন্তব্য করেন।