বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘœ করতে এবং তাদের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশের পক্ষ থেকে সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পুলিশ এবং হাইওয়ে পুলিশ মিলে আমরা এনফোর্স করার চেষ্টা করছি। ঈদ উপলক্ষে যারা রাত্রিকালীন যাত্রা করবেন তাদেরকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেয়া হবে। ঢাকা থেকে বেরিয়ে যাবার পথে আমরা পুলিশ মোতায়েন করেছি, বিশেষ আয়োজন করেছি, অতিরিক্ত জনবল দিয়েছি। সমন্বিতভাবে আমাদের জেলা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, রিজার্ভ পুলিশ সবাই মিলে এখানে ব্যবস্থা নিচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে যাতে অপর সংস্থার সঙ্গে আমরা সমন্বয় করতে পারি। এর বাইরে আমাদের ওয়াচ টাওয়ার আছে, চেকপোস্ট আছে। সব কিছু মিলিয়ে আমাদের যে ব্যবস্থা রয়েছে, তাতে মানুষ নির্বিঘেœ তাদের গ্রামে ফিরতে পারবে। তবে জলাবদ্ধতার কারণে মহাসড়কের সবটুকু অংশ আমরা ব্যবহার করতে পারছি না। পানি দ্রুত নেমে যাওয়ার ব্যবস্থা করলে গাড়ি দ্রুত গতিতে যেতে পারবে। সব মিলিয়ে আমরা মনে করছি আমরা যে সব ব্যবস্থা নিয়েছি, তাতে মানুষ নির্বিঘেœ তাদের গ্রামে ফিরে যেতে পারবে। এই ঈদটা সঠিক ভাবে করতে পারবে বলে আমরা মনে করছি।

তিনি বলেন, নিরাপত্তার সাধারণ টিপসগুলো মেনে চললে ঈদে সতর্কভাবে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছতে পারবেন। নিজের নিরাপত্তাটা আগে আপনাকে নিজে দেখতে হবে। যদি আপনি নিজেই নিজেকে অবহেলা করেন তাহলে আরেকজনের সাহায্য আপনি পাবেন কিভাবে? ঈদে অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টির বিরুদ্ধেও আইনশৃখলা বাহিনী যথেষ্ট তৎপরতা রয়েছে। ইতোমধ্যে বেশকিছু গ্যাং ধরা পড়েছে। তিনি যাত্রীদের রাস্তাঘাটে অপরিচিত কারো কাছ থেকে কোন কিছু গ্রহণ না করার জন্য অনুরোধ জানান।

তিনি ঈদ উপলক্ষ্যে বুধবার দুপুরে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় ও কালিয়াকৈরের চন্দ্রা মোড়ে স্থাপিত পুলিশের কন্ট্রোলরুম উদ্বোধন করতে এসে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।

এসময় তার সঙ্গে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি আতিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত ডিআইজি (প্রশাসন) আনোয়ার হোসেন, গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর-রশিদ, হাইওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার সফিকুল ইসলামসহ প্রমূখ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

তিনি আরো বলেন, ঈদ যাত্রায় এখন সবাই গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করছে। নরমাল সময়ে রাস্তায় যেটুকু গাড়ি থাকে এখন তার চাইতে অনেক বেশী গাড়ি রয়েছে। রাস্তার একটা ধারণ ক্ষমতা থাকে। ধারণ ক্ষমতা যখন অতিরিক্ত হয়ে যায় স্বাভাবিক ভাবেই একটা প্রেসার থাকবেই। এছাড়াও শুধুমাত্র রাস্তায় ট্রাফিকিংটা একমাত্র পুলিশের উপরে নির্ভর করে না। এনফোর্সমেনন্টের উপর নির্ভর করেনা। আরো অনেকগুলো ফ্যাক্টর কাজ করে।

তিনি বলেন, ফিটনেস বিহীন যানবাহনের কারণে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হতে পারে। তবে ফিটনেসবিহীন যানবাহনের কারণে যাতে যানজটের সৃষ্টি হতে না পারে সেজন্য পরিবহন বিভাগের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব গাড়ী নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছে।

আইজিপি আরো বলেন, আমাদের এখানে হাইওয়ে আছে, জেলা পুলিশ আছে। আমরা নরমালি হাইওয়েগুলোতে জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ মিলে এনফোর্স করার চেষ্টা করছি। ঢাকা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কসহ প্রত্যেকটা হাইওয়েতে স্পেশাল এরেজমেন্ট করেছি। আমাদের নরমাল জনবলের অতিরিক্ত জনবল দিয়েছি এবং সমন্বিত ভাবে আমরা জেলা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, রেঞ্জের রিজার্ভ ফোর্স সবাই মিলেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।

পরে আইজিপি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কোনাবাড়ি ও কালিয়াকৈরের চন্দ্রা এলাকায় যাত্রী পরিবহন ও যানজট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও পুলিশের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।