সময় হলে সরকারই সংলাপে বসতে বাধ্য হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।শুক্রবার জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের প্রথম এবং বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান আবদুল মোবিনের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে এ মন্তব্য করেন ব্যারিস্টার মওদুদ।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘সংলাপের প্রয়োজন আপনারা অবশ্যই বোধ করবেন। সময় এলে এ সরকার অবশ্যই সংলাপে বসতে বাধ্য হবে। এটা সময়ের ব্যাপার।আন্দোলনের মুখে যখন যে পরিস্থিতিতে যে অবস্থার সৃষ্টি হবে, সে অবস্থার প্রেক্ষাপটেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সেখানে সংলাপ হতে পারে, সংলাপ ছাড়াও সমস্যার সমাধান হতে পারে।

সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন করার চেষ্টা নিরর্থক হবে বলেও উল্লেখ করেন ব্যারিস্টার মওদুদ। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং তার আগে অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে তিনি বলেন, জনগণ তাদের ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ।

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা এবং তার জন্য প্রয়োজন হলে যে আন্দোলনের কর্মসূচি আমরা এতদিন দিয়ে এসেছি, সেটা আমাদেরকে পরিবর্তন করতে হবে।এমন কর্মসূচি দিতে হবে, যে কর্মসূচি কার্যকর কর্মসূচি হবে। যার মাধ্যমে আমরা তাকে মুক্ত করে আনতে পারব।

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় দন্ড নিয়ে পাঁচ মাস ধরে কারাগারে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এই মামলায় আপিল করে তিনি জামিন পেলেও অন্য মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোয় তার মুক্তি আটকে আছে।গত ফেব্র“য়ারিতে কারাগারে যাওয়ার আগে খালেদা জিয়া নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচি চালিয়ে যেতে বলেছিলেন দলীয় নেতাদের। এরপর বিএনপির আর কঠোর কোনো কর্মসূচি আসেনি।

নির্বাচন পর্যন্ত খালেদার কারামুক্তি সরকার ঠেকিয়ে রাখবে আশঙ্কা থেকে এখন জোরালো কর্মসূচি দেওয়ার কথা বলছেন বিএনপির বিভিন্ন নেতা। পাশাপাশি নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি মানতে সরকারকে বাধ্য করতেও আন্দোলনের কথা বলছেন তারা।মওদুদ বলেন, শুধু ওই নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে কোনো স্বৈরাচারী সরকারকে পৃথিবীর কোথাও অপসারণ করা সম্ভবপর হয়নি। সুতরাং এদেশেও এটা সম্ভবপর হবে না।এই উপলব্ধি থেকে উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত কর্মসূচি দেওয়া হবে, সেই কর্মসূচি সফল হবে এবং দেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

আন্দোলন গড়তে সরকারের বাধা পাওয়ার ধারণা করে সাবেক মন্ত্রী মওদুদ বলেন, তারা (সরকার) বিএনপিকে মাঠে নামতে দেবে না, রাস্তায় নামতে দেবে না। এটাই তাদের উদ্দেশ্য। আমরা বলতে চাই, এর জবাব আমরা ইনশাল্লাহ দেব। আর অল্প কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।

যে ধরনের আন্দোলনে অতীতে স্বৈরাচারী সরকারের পতন হয়েছে ১৯৬৯ সালে এবং ১৯৯০ সালে। সেই ধরনের আন্দোলনই বাংলাদেশে হবে, বলেন ৯০ এর আন্দোলনে পতন ঘটা সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদের তখনকার সঙ্গী মওদুদ।