যশোরে সন্ত্রাসীদের বোমা হামলা ও ছুরিকাঘাতে গুরুত্বর আহত যুবলীগ নেতা আরাফাত মুন্নাফ লিটন (৪০) মারা গেছে। শুক্রবার রাতে বোমা হামলার পর শনিবার সকালে তিনি মারা যান। বোমা হামলায় আরও এক যুবলীগ কর্মী আহত হন। শুক্রবার রাত ৯ টার দিকে শহরের ঘোপ সেন্ট্রাল রোডস্থ মহিলা অধিদপ্তরের সামনে (৩ নংওয়ার্ড আওয়ামী যুবলীগ কার্যালয়ে) এ বোমা হামলার ঘটনা ঘটে।

নিহত আরাফাত মুন্ন্াফ লিটন শহর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও শহরের ঘোপ সেন্ট্রাল রোডের আব্দুল মুন্নাফ মনুর ছেলে। আহত যুবলীগ কর্মী ফজলুল করিম মিলন একই এলাকার জামাল হোসেনের ছেলে। তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের ঘটনায় কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ দুজনকে আটক করেছে। হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে যুবলীগ শহরে মিছিল করে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, লিটন ও মিলনসহ ৭/৮ জন রাত ৯ টার দিকে স্থানীয় আওয়ামী যুবলীগ কার্যালয়ে বসে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখছিলেন। এসময় ২৫/৩০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী এসে লিটনকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। যাওয়ায় সময় সন্ত্রাসীরা ৪/৫ টি বোমা নিক্ষেপ করলে ২ টি বোমা বিষ্ফোরন হয়। বোমার স্পিøন্টারে আহত হন পাশে থাকা মিলন। স্থানীয়রা লিটনকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। মিলনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত ডাক্তার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, লিটনের ডানপাজর, পিঠ ও নিতম্ভে চার টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। এতে অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরনে লিটনের অবস্থা আশংকা জনক হয়ে পড়ে। জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসা দেয়ার পর লিটনকে জেনারেল হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রায় ত্রিশ মিনিট পর সার্জারি কনসালটেন্ট রহিম মোড়ল এসে লিটনের অপরেশন করে। এতে লিটনের অবস্থা আরো আশংকাজনক হয়ে পড়ে। কিন্তু ডাঃ রহিম মোড়ল অপারেশনে দায়িত্বহীনতা ও অদক্ষতার পরিচয় দেওয়ায় লিটনের মৃত্যু হয় বলে জানান স্বজনরা। কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেন লিটনের ডান পাজরের স্টেব ইনজুরির হার্টে আঘাত করে ও তার প্রসাবের থলি ব্রাস্ট হয়ে যায়। পোষ্টমর্টেম রিপোর্টে এ বিষয় গুলি ধরা পড়ে। অথচ অপারেশনের সময় ডাঃ রহিম মোড়ল বিষয়টি ধরতে পারেননি। ওই অবস্থায় লিটনকে ঢাকায় রের্ফার করা হয়। ফলে পথ্যিমধ্যে রক্ত ক্ষরনে লিটনের শারীরিক অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে ফরিদপুর মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভোর ৪ টা ১০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়। যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি তদন্ত আবুল বাশার মিয়া জানান, বোমা হামলার ঘটনায় কারা জড়িত তা পুলিশ উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছে। তবে হত্যাকান্ডের ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দেয়া হয়েছে। মামলার বাদি হয়েছেন নিহত লিটনের চাচাতো ভাই রমজানুল ইসলাম পিন্টু। মামলা নংঃ-৯২। তারিখ ২২/০৬/১৮। মামলায় ১৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং ১০ জনকে অজ্ঞাত দেখানো হয়েছে। এদিকে হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শনিবার সকালে আবুল কাশেম ও সোহরাব হোসেন ওরফে বেড়েকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের বাড়ি শহরতলীর চাঁচড়া মধ্যপাড়া এলাকায়। এরা দুজন আপন ভাই। হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে জেলা যুবলীগের একাংশ শহরে লিটনের লাশ নিয়ে মিছিল করে। মিছিল থেকে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের আটক পূর্বক শাস্তির দাবি জানানো হয়।