সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ও্পর ছাত্রলীগের হামলায় গুরুতর আহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তরিকুল ইসলামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। আজ রোববার সকাল ৯টার দিকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে তাকে নিয়ে ঢাকায় রওনা দেওয়া হয়। গত শনিবার রাতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে ঢাকায় স্থানান্তরের পরামর্শ দেন চিকিৎসক ডা. সাঈদ আহমেদ বাবু। তরিকুলের তত্ত্বাবধানকারী ওই চিকিৎসক বলেন, ‘তরিকুলের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না। তার পা এবং কোমরের হাড় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার পায়ে অস্ত্রোপচার করতে হবে। তাই তার উন্নত চিকিৎসার ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।’

তরিকুলের সঙ্গে থাকা সহপাঠী আবদুল মতিন জানান, ‘তার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। রাজশাহীতে তার ভালো চিকিৎসা সম্ভব নয়। এ জন্য তাকে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছি। মতিউর নামে আরেক সহপাঠী বলেন, ‘রাজশাহীতে তার চিকিৎসা চলছিল একেবারে ধীরগতিতে। এক সপ্তাহেও তার শরীরের কোনো উন্নতি হয়নি। দ্রুতগতিতে তার শরীরের অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। কিন্তু কেন যেন মনে হচ্ছিল, রাজশাহীর ডাক্তাররা সাহস পাচ্ছিল না। তাই সবার পরামর্শে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছি।’

তরিকুলের ছোটবোন ফাতেমা খাতুন জানান, দরিদ্র পরিবারের মানুষ তারা। বাবা একজন কৃষক। কিন্তু ঢাকায় তার চিকিৎসার জন্য আরও অনেক বেশি টাকার প্রয়োজন। দরিদ্র বাবা তার চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে পারছে না। তাই তিনি প্রধানমন্ত্রী, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সমাজের বিত্তবানদের প্রতি অসহায় ভাইয়ের চিকিৎসার খরচ বহনে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান।

গত ২ জুলাই বিকেলে কোটা সংস্কার আন্দোলনের দাবিতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আন্দোলনকারীরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান হেটের সামনে পতাকা মিছিলে জন্য সমবেত হচ্ছিলেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দেন। তারা হাতুড়ি, লোহার রড, রামদা ও লাঠিসোটা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মার্স্টার্সের ছাত্র তরিকুল ইসলামের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এতে তার ডান পা, পাজরের হার ভেঙে যায়। জখম হয় শরীরের বিভিন্ন স্থানে।

পরে ওইদিনই তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার তাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা সেবা না দিয়ে বের করে দেয়। এর পর তাকে ওই দিন বিকেলে নগরীর রয়্যাল হাসপাতালের ৬১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে তাকে সেখান থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।