অবশেষে অনশন ভাঙলেন নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে টানা এক মাস আন্দোলন চালানোর পর সরকারের আশ্বাসে তারা তা স্থগিতের ঘোষণা দেন।বুধবার বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী পানি পান করিয়ে শিক্ষকদের অনশন ভাঙান।এ সময় জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেন, আপনারা দীর্ঘদিন ধরে খোলা আকাশের নিচে না খেয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। এটি জাতির জন্য কষ্টদায়ক বিষয়। আপনাদের এ কষ্টে সমগ্র জাতি আজ উদ্বিগ্ন।

তিনি বলেন, আপনাদের দাবির যৌক্তিকতা আছে। প্রধানমন্ত্রী সংসদে আপনাদের বিষয়টি নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা আশা করছি বিষয়টি দ্রুত সমাধান হবে। আপনাদের আন্দোলনের কারণে জাতির যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সে বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে।আপনাদের সমস্যা সমাধানে শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি উপায় বের করবে, যাতে দ্রুত এমপিওভুক্তিকরণ করা সম্ভব হয়। আপনারা শিক্ষার্থীদের কথা ভাবুন, দেশের মানুষের কথা ভাবুন। আন্দোলন ছেড়ে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করছি।এ সময় উপস্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা মানুষের কথা ভাবেন। আপনাদের যৌক্তিক দাবি ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন হবে। আপনারা শিক্ষার্থীদের কথা ও সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে অনশন ভেঙে পাঠদানে মনোযোগ দিন। দ্রুত আপনাদের দাবি বাস্তবায়ন হবে।রাশেদা কে চৌধুরী পরে এক মহিলা শিক্ষককে পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান।

নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিনয় ভূষণ রায় বলেন, সরকারের ওপর আস্থা রেখে আমরা অনশন ভেঙে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। তিনি আমাদের দাবি আদায়ের বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন।সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে। দাবি বাস্তবায়নে আগামী দেড় থেকে দুই মাস সময় লাগতে পারে।তিনি বলেন, সরকারি নির্দেশনায় আনিসুজ্জামান স্যার ও রাশেদা কে চৌধুরী ম্যাডাম শিক্ষকদের মাঝে এসে পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙিয়েছেন। সবার ওপর আস্থা রেখে আমরা আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কাল (বৃহস্পতিবার) থেকে আবারও সব শিক্ষক পাঠদানে মনোনিবেশ করবেন- যোগ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক।এমপিওভুক্তির দাবিতে গত এক মাস ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা। প্রতিদিনের ন্যায় বুধবার অর্থাৎ আন্দোলনের ১৭তম দিনে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে খোলা আকাশের নিচে বসে অমরণ অনশন পালন করেন তারা।