যশোর কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারট কার্যালয়ে আমদানীকারকদের মূসক ১৯ চালান জমা দেয়ার সময় ফাইল প্রতি অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

যশোর কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট অফিসের অধীনে চুয়াডাঙ্গা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, যশোর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, মাগুরা, মেহেরপুর, নড়াইল এবং রাজবাড়ি জেলার সম্বন্বিত মূসক কার্যক্রম চলছে। একই সাথে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ৭টি ভ্যাট সার্কেল, ৭টি গবাদী পশু আমাদানীর কাস্টমস করিডোর ৫টি কাস্টম গোডাউনসহ এই গোডাউনের এলাকার কার্যক্রম চলছে। কাস্টমস,এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারট যশোর মূসক নিবন্ধিত ২২২৭টি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, ৩০ হাজার ৫৩৯টি সেবা রেন্ডার, ১২ হাজার ৭০১টি ব্যবাসায়িক প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব কার্যক্রমকে গতিশীল করে আসছে। সরকার নির্ধারিত সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অফিস টাইম করলেও কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারট, যশোরের কার্যালয়ে বেলা ১ টার পর থেকে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাদেরসহ অফিস পিয়নকেও পাওয়া যায় না। সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাদের নিকট মাসিক দাখিলপত্র, ট্রেজারী চালান দাখিলসহ বকেয়া রাজস্ব আদায়, আটক ও মামলা সংক্রান্ত বিষয় সংশ্লিষ্ট থাকে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দ্বিতীয় সচিব (শূঃভঃপ্রঃ-১) বরাবর, গত ২০১৭ সালের ০৯ মাসে যশোর কমিশনার মহদোয়ের প্রেরিত নথি নং – ৪র্থ/এ(৯৫)সিটিজন চার্টার/মূসক/যঃ২০১৬ এর সিটিজেন চার্টর (ওয়ের সাইটে প্রদর্শনের জন্য) ২নং সারিতে সেবা প্রদানের প্রতিশ্রুতি এর ২.১ এ নাগরিক সেবার (৩) নং কলামে সেবা প্রদান পদ্ধতি এবং (৬) নং কলামে সেবা প্রদানের সময়সীমা সু স্পষ্ট উল্লেখ থাকলেও তা কোন সময়ে মানা হচ্ছে না।

বেলা ১টার পর করদাতারা ট্রেজারীচালান, মাসিক রির্টান হাতে নিয়ে দাড়িয়ে থাকলেও স্যাররা (সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তারা) লাঞ্চে আছেন এই অজুহাতে বেলা ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।

ভুক্তভোগীরা জানান, প্রতি ইংরেজি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে সার্কেল অফিসে দাখিল করার বিধান থাকলেও করদাতারা দাখিলপত্র (মূসক-১৯) রাজস্ব কর্মকর্তাদের নিকট জমা দিতে গেলে কর্মরত সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা উজ্জ্বল মন্ডল, বনজকান্তি রায়, ইমতিয়াজ আহমেদ ফাইল প্রতি নুন্যতম ১ হাজার টাকা থেকে শুরু করে দুই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত অবৈধ ভাবে নিচ্ছেন। আর এ টাকা নিচ্ছেন অফিস সহকারি তরিকুল ইসলাম। টাকা না দিলে দাখিলপত্র (মূসক-১৯) গ্রহণ করা হয় না। ঘন্টার পর ঘন্টা করদাতাকে খাতাপত্র, মূসক-১১ চালান, মূসক-১৯ চলতি হিসেবের নামে হয়রানী করা হয়। অফিস সহকারী তরিকুলের হাতে টাকা দিলেই সবাই ম্যানেজ হয়ে (মূসক-১৯) পরীক্ষার জন্য গৃহিত হলো লিখে অথবা দাখিলপত্র (মূসক-১৯) প্রাপ্তি স্বীকারপত্র দেওয়া হয়। প্রতিদিন অফিস সহকারী, রাজস্ব কর্মকর্তাগন করদাতাদেরকে জিম্মি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ফলে সরকারের কোটি কোটি টাকা ভ্যাট আদায়ে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগে জানিয়েছেন।দাখিলপত্র প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে রাজস্ব কর্মকর্তা পরীক্ষা করে করদাতার নিকট এক কপি ফেরত দেওয়ার বিধান থাকলেও করদাতাদের অভিযোগে জানা গেছে এখনও কোন করদাতা দাখিলপত্র (মূসক-১৯) ৩০ দিন বা তারও অধিক সময় পার হলেও এক কপিও দেওয়া হয় না। জানা গেছে ‘আমদানি কারকরা পন্য আমদানির সময় শুল্ক স্টেশনে দাখিলকৃত বিল অব এন্ট্রিতে শুল্ক কর্মকর্তা কর্তৃক পন্যের অনুমোদিত শুল্কায়নযোগ্য মূল্যর সহিত আমদানি শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক ও অন্যান্য শুল্ক ও কর (মূল্য সংযোজন কর ও অগ্রীম আয়কর ব্যতিত) যদি থাকে গননা করে তার সাথে ৩৩.৩৪ শতাংশ মূল্য সংযোজন পূর্বক সর্বমোট মূল্যের উপর ৫ শতাংশ হারে অগ্রিম ব্যবসায়িক পর্যায় মূসক পরিশোধ করে। অভিযোগ উঠেছে পন্য আমাদিনর পর বিক্রয় করলেও আমদানি কারকগন দাখিলপত্র (মূসক-১৯) দাখিল করিতে গেলে তাদের কেউ হয়রানি করা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। মূল্য ঘোষনা, দাখিলপত্র (মূসক-১৯), চলতি হিসাব, ক্রয়বিক্রয় সমন্বিত খাতা, মূসক-১১ নামে চলছে অহেতুক হয়রানী’। ব্যবসায়ী, করদাতাসহ সুশীল সমাজ সরকারের উর্ধতন কর্মকর্তাসহ দুর্নীতি দমন কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।এ ব্যাপারে অফিস সহকারি তরিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি ওই সব অফিসারদের সাথে নয়। ওই সব অফিসাররা সবাই বেনাপোল সার্কেলে আর আমি সদর সার্কেলে আওতাধীন। আমার টাকা নেয়ার প্রশ্নই আসে না।সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা উজ্জ্বল মন্ডলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, সম্পূর্ণ অবান্তর কথা। আপনি অফিসে এসে দেখে যেতে পারেন।