বাংলাদেশের বয়স্ক নাগরিক ও মুক্তিযোদ্ধাদের মাল্টিপল ভিসা দেওয়া সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ ও ভারত।রোববার (১৫ জুলাই) সচিবালয়ে দুই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে ‘রিভাইস ট্রাভেল অ্যারেজমেন্টস-২০১৮’ শীর্ষক চুক্তি সই হয়।পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খাঁন কামাল সাংবাদিকদের এতথ্য জানান। আঞ্চলিক নিরাপত্তা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, অপরাধমূলক কর্মকা- দমনে সহযোগিতা এবং ভ্রমণ সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করতে ঢাকায় হল ভারত ও বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের ষষ্ঠ বৈঠক।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হওয়া এ বৈঠকে নয় সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। আর বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।পুলিশ প্রধান, কোস্টগার্ড প্রধান, র‌্যাব প্রধান, ডিএমপি কমিশনারসহ বিভিন্ন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন এ বৈঠকে ।

চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী ও ভারতের পক্ষে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্পেশাল সেক্রেটারি বিরাজ রাজ শর্মা নিজ নিজ পক্ষে সই করেন।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ভিসা সহজীকরণের জন্য আজকে একটি চুক্তি সই হয়েছে। যাদের বয়স ৬৫ বছর বা তার বেশি তারা ভিসার আবেদন করলে পাঁচবছরের মাল্টিপল ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। বয়স্ক নাগরিকরা চাইলে এই সুবিধা পাবেন।মুক্তিযোদ্ধোরাও এমন ভিসা সুবিধা পাবেন জানিয়ে তিনি বলেন, দেশ মাতৃকার জন্য যারা যুদ্ধ করেছিলেন, সেই মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ভারত একই ধরনের সুবিধা দিচ্ছে। এছাড়া মেডিকেল ভিসা, স্টুডেন্টস ভিসা সহজ করার জন্য রাজনাথ সিং বলে গেছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল।তিনি বলেন, আমাদের দেশ থেকে প্রতিবছর বিভিন্ন কারণে এক কোটি মানুষ বিদেশে যান। এর মধ্যে কেবল ভারতেই যান ৩০ লাখ মানুষ।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বৈঠকের আগে জানিয়েছিলেন, নিরাপত্তা সহযোগিতা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, কনস্যুলার সেবা সংক্রান্ত বিষয় এবং জাল মুদ্রা, মাদক ও মানবপাচারের মতো অপরাধমূলক কর্মকা- কীভাবে দমন করা যায় সেসব বিষয় নিয়েও আলোচনা হবে বৈঠকে।দুই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সর্বশেষ বৈঠকটি হয়েছিল ২০১৬ সালের জুলাইয়ে নয়া দিল্লিতে। ওই বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নানা দিক পর্যালোচনার পাশাপাশি সম্পর্ক আরও জোরদারে করণীয় সম্পর্কে আলোচনা হয়েছিল।ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রোববার সকালে সচিবালয়ে পৌঁছালে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রাঙ্গণে পুলিশের একটি চৌকস দল ভারতীয় মন্ত্রীকে সশস্ত্র সালাম জানায়।তিন দিনের সফরে শুক্রবার ঢাকায় আসেন রাজনাথ সিং। শনিবার সকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরে যমুনা ফিউচার পার্কে ভারতীয় ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের উদ্বোধন করেন। বিকালে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী ভবনের উদ্বোধন করেন তিনি।