ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর জন্য নাশকতা সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে, তাদের ব্যাপারে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। বুধবার (১৮ জুলাই) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে কমিটির সভাপতি ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু এ কথা জানান।তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর জন্য এবং নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে যারা ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছে, তাদের ব্যাপারে কাজ করা হচ্ছে, যাতে তারা এ জিনিসটা না করতে পারে।সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালসহ কমিটির সদস্যরাউপস্থিত ছিলেন।গত ১৮ মে থেকে পরিচালিত মাদকবিরোধী অভিযানে এ পর্যন্ত ২৫ হাজার ৫৭৫টি নিয়মিত মামলা হয়েছে জানিয়ে কমিটির সভাপতি আমু বলেন, মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অনেককে সাজা দেওয়া হয়েছে। চিহ্নিতদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। যার কারণে অভিযান অত্যন্ত ফলপ্রসূভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে কারাগারে আছে ৮৯ হাজার ৫৮৯ জন, তার ৪২ শতাংশই মাদকবিরোধী অভিযানে ধরা পড়েছে।মন্ত্রী বলেন, এ যাবত ৩৭ হাজার ২২৫ জন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমি যতদূর জানি, ৩০ এর মতো মারা গেছে।মাদকবিরোধী অভিযান কতোদিন চলবে- জানতে চাইলে আমু বলেন, এটা যতোদিন সম্পূর্ণভাবে নিরসন না করা যায়, ততোদিন পর্যন্ত চলবে।তিনি বলেন, মাদকের পাচার রোধে বিজিবি সতর্কাবস্থায় রয়েছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বিজিবির সঙ্গে অন্যান্য সংস্থাগুলো, তারাও ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে।

ঢাকা মহানগরীতে ২৮৭টি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিট রয়েছে, প্রতিটি বিটে জঙ্গি ও মাদকবিরোধী সচেতনতামূলক প্রচারণা চলছে। পাশাপাশি মাদকবিরোধী অভিযান চলবে।তিনি বলেন, আমাদের মূল ব্যাপার আইন-শৃঙ্খলাকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা এবং মাদক নিরসন। যেটার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীও জিরো টলারেন্সের কথা বারবার বলছেন। আমরাও মনে করি দেশকে যেভাবে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সে থেকে উত্তরণের জন্য মাদকবিরোধী অভিযান অত্যন্ত ফলপ্রসূভাবে এগিয়ে যাক, তার জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করি।এ ব্যাপারে মিডিয়াকে সহযোগিতার আহ্বান জানান মন্ত্রী।

অভিযানে শুধু খুচরা ব্যবসায়ীরা ধরা পড়ছে বলে যে অভিযোগ সে প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এটা ঠিক না, আপনারা ইতোমধ্যে লক্ষ্য করছেন এটার ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত কঠিন নির্দেশ- যে কেউ জড়িত থাক না কেন, যতো উপর মহল জড়িত থাক না কেন, কারো ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।কক্সবাজারের একজন এমপির জড়িত থাকার কথা আসছে- তাকে ধরার ব্যাপারে কোনা পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না- এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, নিশ্চয়ই প্রমাণসাপেক্ষে ধরা হবে। যদি প্রমাণিত হয়। সেটা আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিন্তু বলেছেন আগে, নিজে পত্রিকায় পড়েছি আমি। যথাযথ প্রমাণ পেলে কাউকে ছাড়া হবে না। এ ব্যাপারে আপনারা নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন।আমাদের প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত কঠিনভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, এর সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না, সে যেই হোক।মন্ত্রী বলেন, বিগত মে-জুন মাসে সারাদেশে খুন, ডাকাতি, নারী নির্যাতন মামলার ৮০ শতাংশই উদঘাটিত হয়েছে। এ বছর দু’টি জঙ্গি অভিযান পরিচালিত হয়েছে। ধর্ষণ, অপহরণ, নারী নির্যাতন সবই হ্রাস পেয়েছে।গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশনে উৎসবমুখরভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আসন্ন তিনটি সিটি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের জন্য তার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপরতা অব্যাহত রাখবে।মাদক নির্মূল ও আসক্তদের চিকিৎসার ব্যবস্থার জন্য বিভাগীয় শহরে ও জেলায় ২০০-২৫০ বেডের হাসপাতালের ব্যবস্থা আরও জোরদারে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।