বিষধর সাপকে বসে আনা মানুষের কাছে চিরকালই আকর্ষণীয়। তারওপর যদি একের পর এক প্রদর্শন করা হয় বিষধর সাপের নানা কৌশল তাহলে তো কথাই নেই। এমনই এক ঝাপান খেলা দেখতে আসে আশপাশের হাজার হাজার মানুষ। খেলাকে ঘিরে ওই এলাকা পরিণত হয়েছিল উৎসবের নগরীতে। বাদ্যের তালে তালে আর বাশির সুরে একে একে ঝুড়ি ও হাড়ি থেকে বের হয়ে আসে গোখরাসহ বিভিন্ন বিষধর সাপ। মনসা মঙ্গলের পালা গানসহ বিভিন্ন গানের সাথে বাদ্যের তালে সাপুড়েকে নিজে নাচতে হয় আর সাথে ফনা তুলে সাপও বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে। সাপুড়ের ইশারায় সাপের এই অঙ্গ ভঙ্গি প্রদর্শন মানুষকে দেয় অনাবিল আনন্দ। এমনই এক ঝাপান খেলা অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। শনিবার বিকেলে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ, শিশুরা উপস্থিত থেকে নিবিড় দৃষ্টিতে উপভোগ করেন এই খেলা। আর খেলাকে ঘিরে এখানে সৃষ্টি হয় উৎসবের আমেজ। ৬ সাপুড়ে দলের অর্ধ শতাধিক সাপের মধ্যে নিজেকে সেরা প্রমাণ করতে প্রতিটি সাপ প্রদর্শন করে নিজেদের আকর্ষণীয় কসরত। আর এই দুর্লভ দৃশ্য দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন দর্শনার্থীরা। অনেকে জীবনে প্রথম আবার অনেকে অনেক দিন পর দেখছেন এ খেলা। এই ঝাপান খেলা দেখে খুবই আনন্দিত দর্শক। তাই প্রতিনিয়ত এ ধরনের আয়োজন করার দাবি তাদের। আর সাপুড়েরা জানান, মানুষকে আনন্দ দেওয়াই মূল উদ্দেশ্যে। দিনভর এ খেলায় সকলকে হারিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করে শৈলকুপার লিটন সাপুড়ে। দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন শহিদুল ইসলাম। এ ব্যাপারে সৃজনী বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ড.এম হারুন অর রশীদ বলেন, চিরায়ত বাংলার ঐহিত্যবাহী এ খেলা ধরে রাখতেই এই আয়োজন। মানুষকে নিবিড় আনন্দ দেওয়ার মধ্যে থাকে নিজেদের আনন্দ পাওয়া। শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।