জাপানিদের বাংলাদেশ সফরের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।তিনি বলেছেন, এখন এই নিষেধাজ্ঞা থাকার যুক্তিসঙ্গত কোনো কারণ নেই। এ বিষয়ে জাপান সরকার দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বাংলাদেশ খুশি হবে। জাপান বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাষ্ট্র। উভয় দেশের বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। আগামী দিনগুলোতে এ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।জাপান সফররত বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সোমবার জাপানের পররাষ্ট্রবিষয়ক পার্লামেন্টারি ভাইস মিনিস্টার ইয়াও হোরি-এর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার সময় এসব কথা বলেন।জাপানের রাজধানী টোকিওতে কিওই নাদামান হোটেলে দ্বিপক্ষীয় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে এফবিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমই-এর প্রেসিডেন্ট মো. সিদ্দিকুর রহমান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং ডিটিও মো. ওবায়দুল আযম এবং জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতসহ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সাধারণ সদস্যরা বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।বাণিজ্যমন্ত্রী জাপানি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে জাপানি ভাইস মিনিস্টারকে উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন বিনিয়োগের জন্য খুবই উপযোগী ও লাভজনক স্থান। বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে নিরাপদ বিনিয়োগ করতে পারেন। বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগকারীদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। এখন বিনিয়োগকারীরা শতভাগ বিনিয়োগ করতে পারেন এবং যে কোনো সময় লাভসহ বিনিয়োগকৃত অর্থ ফিরিয়ে নিতে পারেন।তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ সরকার আইন প্রণয়ন করে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোনে জাপানের বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিনিয়োগকারীরা কম মূল্যে উন্নতমানের পণ্য উৎপাদন করে সেটা রফতানি করে লাভবান হতে পারবেন। বাণিজ্যমন্ত্রী জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে নিয়মিত পাবলিক-প্রাইভেট ইকোনমিক ডায়ালগের চতুর্থ বৈঠক ঢাকায় অনুষ্ঠানের প্রস্তাব দেন।দ্বিপাক্ষিক আলোচনার সময় জাপানি ভাইস মিনিস্টার বলেন, বাংলাদেশ জাপানের বন্ধু রাষ্ট্র। বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে জাপান খুশি। বাংলাদেশের অবকাঠামোর উন্নয়ন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাপানের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশে জাপানের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরও বৃদ্ধি করতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।তিনি মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, জাপান সরকার ও জাপানের জনগণ শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিক শ্রদ্ধা প্রদর্শন করছে।তিনি রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনার ও উৎসাহিত করার প্রতিশ্রুতি দেন।জাপানি ভাইস মিনিস্টার বলেন, এ বিষয়ে উপযুক্ত আন্তর্জাতিক তদন্ত করার পক্ষে জাপান সরকার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। জাপানিদের বাংলাদেশ সফরের বিষয় এবং জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে নিয়মিত পাবলিক-প্রাইভেট ইকোনমিক ডায়ালগের চতুর্থ বৈঠক ঢাকায় অনুষ্ঠানের বিষয় জাপান সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে বলে বাণিজ্যমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন।