কথায় আছে পড়া লেখা করে যে গাড়ি-ঘোড়ায় চড়ে সে। জীবনে বড় হতে হলে চাই উন্নত পড়াশোনা। আর পড়াশোনার একটি ধাপ হলো নিজের মনের মতো ক্যাম্পাস। একটি সুশোভিত পরিবেশ থাকলে পড়াশোনার বেগ যেন বেড়ে যায় অনেক গুণ।
একটু নিরিবিলি পরিবেশ, শহর থেকে সামান্য একটু দূরে ।যেখানে থাকবে না কোন কোলাহল। থাকবে পাখির কিচির-মিচির আর একটু সবুজের পরশ।তবেই তো জমবে ক্যাম্পাস। ইট-বালির শহরে হয়তো মনের মতো ক্যাম্পাস পাওয়া দুষ্কর। তবুও শিক্ষার্থীরা তার ক্যাম্পাসকে পেতে চান নিজের মতো করে।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১২ বছরেরও স্থাপন করা যায়নি ক্যাম্পাসের সীমানা প্রাচীর। তবে এবার সীমানা প্রাচীর স্থাপন করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সীমানা প্রাচীর না থাকার কারণে অনেকটাই অরক্ষিত হয়ে পড়েছে গোটা ক্যাম্পাস। ফলে যেকোন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অনায়াসে প্রবেশ করছে বহিরাগতরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ে সীমানা প্রাচীর না থাকায় দিনে রাতে যখন খুশি তখন বহিরাগতরা ঢুকে পড়ে ক্যাম্পাসে এতে যেকোন সময় অনাকাংখিত ঘটনা ঘটাতে পারে বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সড়কগুলোও সন্ধ্যার পর অনিরাপদ হয়ে ওঠে।

সীমানা প্রাচীর স্থাপন সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রকৌশলী মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, নবনির্মিত ছাত্রীহল থেকে শুরু করে কলা ভবন পর্যন্ত সীমানা প্রাচীর স্থাপন করা হবে। কেউ যেন অতি সহজে সীমানা প্রাচীর টপকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য মাটি থেকে দৃশ্যমান নয়ফুট উচু করা হবে।সীমানা প্রাচীরটি সবুজ বেষ্টনি দ্বারা আবদ্ধ থাকবে।
তিনি বলেন, সীমানা প্রাচীর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮০ লক্ষ টাকা। সীমানা প্রাচীর স্থাপনে কোন প্রকার পকেট গেট হবে না( যদিও শিক্ষার্থীরা চুরুলিয়া মঞ্চ সংলগ্ন পকেট গেটের দাবি জানিয়ে একাধিক বার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন করেছে)। যতদূত সম্ভব আমরা তাড়াতাড়ি এর কাজ সমাপ্ত করব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ম ব্যাচের শিক্ষার্থী আশরাফুজ্জামান পারভেজ এবং বিল্লাল হোসাইন জানান, প্রাচীর না থাকায় উন্মুক্ত রাস্তা দিয়ে যেকোন লোক প্রবেশ করে। তবে এবার সীমানা প্রাচীর নির্মাণে বহিরাগত প্রবেশ কিছুটা হলেও হ্রাস পাবে। আমরা আমাদের ক্যাম্পাসে নিজেদের মত করে থাকতে চাই।
ক্যাম্পাস সম্পর্কে জানতে চাইলে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের মাহমুদুল হাসান বলেন, এখানে পড়াশোনা করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসে অসংখ্য শিক্ষার্থী। পড়াশোনার মান, ক্যাম্পাসের পরিবেশ নিয়ে কিছু বলার অবকাশ রাখে না। সময় পেলেই একসাথে গল্প করি, আড্ডা দেই, কোথাও ঘুরতে যাই।
কিন্তু ক্যাম্পাসে নিজেকে মাঝে মাঝে বড়ই অসহায় মনে হয়। ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। যে কেউ অবাধে বিচরণ করে পুরো ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট করছে। অনেক সময় বহিরাগতরা অপকর্ম করে চলে যায়। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
তবে সীমানা প্রাচীর নির্মাণে কতটুকু বহিরাগত প্রবেশ হ্রাস পায় সেটাই দেখার বিষয়। তবে আমাদের বিশ্বাস সীমানা প্রাচীর নির্মাণ এবং প্রশাসনের সদয় দৃষ্টির মাধ্যমে বহিরাগত প্রবেশ কিছুটা লাগব টানবে।

রাশেদুজ্জামান রনি, জাককানইবি প্রতিনিধি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়