বিগত কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণে হাটহাজারী উপজেলাধীন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) ১নং দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের চৌধুরী হাটের পশ্চিমে ঐতিহাসিক সাধুর পাহাড়ে ভয়াবহ ধ্বসের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধ্বসের কারণে পাহাড়ের চুড়ায় স্থাপিত সত্যানন্দ সাধু বাবাজীর মন্দিরটি বিধ্বস্ত হয়ে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, চসিকের দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের জঙ্গলাকীর্ণ ঐতিহাসিক সাধুর পাহাড়ে সত্যানন্দ বাবাজির মৃত্যুর পর তাকে সেখানে সমাহীত করা হয়। তাঁর সমাধীস্থলটি সে সময় থেকে সাধুর পাহাড় হিসাবে পরিচিতি লাভ করেন। এ মহাপুরুষের বাৎসরিক আর্বিভাব ও প্রয়ান উৎসব সেখানে প্রতিবছর মহাসমারোহে উদযাপিত হয়। এ দুই উৎসবে এ মন্দিরে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে।সীতাকুন্ড শংকরমঠের পরিচালনাধীন সত্যানন্দ মঠের পাহাড়ের চুড়ায় মন্দিরসহ বাবাজীর বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করা হয়। উচুঁ পাহাড়ের বড় এলাকা জুড়ে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করা হলে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে প্রবল বর্ষণে পাহাড় ধ্বসে পড়ে এখন মন্দিরটি বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। মন্দিরটি বিলীন হয়ে পড়ার আশংকা প্রকাশ করছেন আশ্রমে আগত ভক্তরা জানান, সাধুর পাহাড়ে পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপনের জন্য পরিচালনা পরিষদ সরকারের স্বীকৃতি স্বরূপ বৃক্ষরোপন পুরস্কার লাভ করেন। সাধুর পাহাড়ের গুরুত্ব অনুধাবন করে সরকারের দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ ১৫ লক্ষাধীক টাকা ব্যয়ে পাহাড় ধ্বস রক্ষার জন্য নিরাপত্তা প্রাচীর নির্মাণ করে দেন। এরপরও মন্দিরের উত্তর-পশ্চিম অংশের পাহাড় ধ্বস তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে সামনের দুই এক বর্ষা মৌসুমের মধ্যে মন্দিরটি বিলীন হয়ে পড়বে।

সত্যানন্দ সাধু বাবাজীর মন্দির পরিচালনা পরিষদের কর্মকর্তা ডা: অশোষ কুমার দেব গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, সাম্প্রতিক সময়ের প্রবল বর্ষণে সাধুর পাহাড়ে বিশাল এলাকা ধ্বসে পড়েছে। আবার ও বৃষ্টি হলে বর্ষণের তোড়ে পাহাড়ের মন্দির ধ্বসে পড়ার আশংকা রয়েছে। বৃষ্টিতে পাহাড় ধ্বস রোধ করতে পলিথিন দিয়ে বিধ্বস্ত স্থান ঢেকে দেওয়া হয়েছে। তিনি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি বহনকারী সাধুর পাহাড়ে স্থাপিত সত্যানন্দ মঠ রক্ষার জন্য সরকারের দায়িত্বশীল প্রশাসনের জরুরী প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে সময় সাধুর পাহাড়ে জঙ্গলে দিনের বেলায় বিপ্লবীরা আত্মগোপন করে থাকতেন। রাতের বেলায় তারা সেখানে সভা করে আন্দোলনের নীতি নিধারণ করতেন। চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি মহাসড়কের চৌধুরীহাট বাজারের প্রায় দুই কিলোমিটার পশ্চিম পাশের্^ নির্জণ পাহাড়ী জঙ্গলাকীর্ণ এলাকায় সত্যানন্দ সাধু বাবাজী সাধনা করতেন। বিপ্লবীরা ব্রিটিশের সেনাবাহিনীর কবল থেকে আত্মরক্ষার জন্য নিরাপদ আশ্রয় খুজতে গিয়ে সত্যানন্দ বাবাজীর সন্ধান পেয়ে সেখানে নিরাপদ আশ্রয় গ্রহন করেন।