সূর্যকে স্পর্শ করার জন্য সর্বকালের সবচেয়ে দ্রুতগতির মহাকাশযান সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা। স্থানীয় সময় শনিবার দিনগত রাত ৩টা ৩১ মিনিটে ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল থেকে পার্কার সোলার প্রোব নামের এই মহাকাশযানটি উৎক্ষেপণ করা হয়। উৎক্ষেপণের দুই মিনিটের মাথায় নাসার গ্রাউন্ড কন্ট্রোল জানিয়েছে, এটি নির্ধারিত গতিপথে রয়েছে এবং উড্ডয়ন আশাব্যঞ্জক হয়েছে। এর আগে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে গতকাল শনিবার মহাকাশযানটির উৎক্ষেপণ পিছিয়ে দিয়েছিল নাসা।

সূর্যের বহিরাংশের বায়ুমণ্ডল ছোঁয়ার এ মিশনটি সফল হওয়ার জন্য প্রোবটিকে ৩০ লাখ ৮৩ মিলিয়ন মাইল (৬০ লাখ কিলোমিটার) পথ অতিক্রম করতে হবে। মহাকাশযানটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ চার লাখ ৩০ হাজার মাইল গতিতে চলবে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এই গতিতে চললে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন থেকে জাপানের রাজধানী টোকিওতে যেতে এক মিনিটের কম সময় লাগে।
প্রোবটি আগামী ছয় সপ্তাহে শুক্র গ্রহ অতিক্রম করবে। সূর্যের বায়ুমণ্ডলে পৌঁছানোর জন্য এটার প্রায় তিন মাস লেগে যাবে বলে জানা গেছে। তবে এই মিশনটি শেষ হতে সাকুল্যে লাগবে সাত বছর। এ সময় এটি সূর্যের বায়ুমণ্ডলকে ২৪ বার প্রদক্ষিণ করবে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, সূর্যের পৃষ্ঠ থেকে এর বায়ুমণ্ডল অনেক বেশি উত্তপ্ত। সূর্যের এ বায়ুমণ্ডলকে বলা হয় কোরোনা। কোরোনার কাছাকাছি যাওয়ার পথে মহাকাশযানটি শুক্র গ্রহকে অতিক্রম করে যাবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

এ মিশনটিকে এখন পর্যন্ত হওয়া মহাকাশ মিশনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী বলা হচ্ছে। এ মিশনটির পেছনে নাসার ব্যয় হচ্ছে দেড়শ’ কোটি ডলার। পৃথিবীর প্রভাব থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য এই মহাকাশযানটি মঙ্গলগ্রহে উৎক্ষেপণ সময়কালীন লঞ্চ এনার্জি থেকে ৫৫ গুণ বেশি লঞ্চ এনার্জি তৈরি করতে হয়েছে। পার্কার সোলার প্রোবটি দেখতে একটা ছোট ফ্যামিলি কারের মতো। তবে ছোট হলেও এটিতে একটি ৭২ মিটার লম্বা এবং ১৫ মিটার প্রস্থের ডেল্টা আইভি রকেটে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। এই রকেটটি ৬০০ টনের মতো জ্বালানি নিয়ে যাত্রা করেছে বলে জানিয়েছে নাসা।