কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও পরিবারের সদস্যরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শুক্রবার মানববন্ধন করেছেন।তাঁরা গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীদের মুক্তির অনুরোধ করেন।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানের মা ঝিনাইদহের সালেহা বেগম। ছেলের মুক্তি চেয়ে তিনি বলেন, আমার বাবা কোনো অপরাধ করেনি। আমার বাবাকে ছেড়ে দিন। বাবাকে ছাড়া আমি ঈদ করতে পারব না। বাবার সঙ্গে ঈদ করতে দিন। ঈদের আগে বাবাকে ছেড়ে দিন। কোটা আন্দোলনের আরেক নেতা তারিকুল ইসলামের বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, ছেলে ছাত্রলীগের রাজনীতি করত। পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতে পাঠিয়েছিলাম। আন্দোলন করে সে এখন কারাগারে। কার কাছে গেলে ছেলেকে ফিরে পাব?তারিকুলসহ কোটা আন্দোলনে গ্রেপ্তার হওয়া অন্যান্য শিক্ষার্থীর মুক্তি দাবি করেন শফিকুল ইসলাম।মানববন্ধনে ভুক্তভোগী পরিবারের প্রতি রাজনৈতিক নেতা, মানবাধিকারকর্মী, শিক্ষক ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোকজন সংহতি জানান।

মানববন্ধনে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, হাতে দড়ি বেঁধে ছাত্রদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছেÑএটা সভ্য সমাজের লক্ষণ না। মানুষকে কথা বলতে দিন।প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, মুখ বন্ধ সমাজের মা হবেন না। সব জায়গায় ভূত দেখা ছাড়েন। ভুল পথে চালিত হবেন না।নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন ছিল নিরাপদ আন্দোলন। এটি সরকারবিরোধী বা সরকার পতনের কোনো আন্দোলন ছিল না। দেশের ১৬ কোটি মানুষই চাইÑসড়ক নিরাপদ হোক। মন্ত্রী, সাংসদ সবাই বলছেন, আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের গ্রেপ্তার করা হবে। অথচ সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বর্তমান সরকার বিনা ভোটের সরকার, তাই তারা সব সময় ভয়ে থাকে। তারা ভাবে এই বুঝি তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হলো। ভয়ে থাকে বলেই সরকার কিশোরদের আন্দোলনকে ভয় করে। তাদের গ্রেফতার করে নির্যাতন করছে।মান্না বলেন, বর্তমানে সেলোয়ার কামিজ পড়ে থাকলেই বিপদ, গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে। পত্রিকায় দেখলাম গতকাল এরকম একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরকম কত কামিজ পড়া, প্যান্ট পড়া ব্যক্তিকে মনে মনে ধরে রেখেছে রাস্তায় পেলেই ধরে নিয়ে যাবে তার কোনও ঠিক নাই।মান্না আরও বলেন, আমরা সবাই জানি নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন একটি নিরাপদ আন্দোলন। এটা সরকারবিরোধী কোনও আন্দোলন ছিল না। সরকার পতনের এবং রাজনীতি কোনও আন্দোলন ছিল না। বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ চায় যখন তারা রাস্তায় হাঁটবে নিরাপদে হাঁটবে শুধু ঢাকা মহানগরীতে নয় সারাদেশে রাস্তা নিরাপদ নয় এই জন্য কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা রাস্তায় নেমেছিল।নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের সময় দায়িত্বরত সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীদের বিচার দাবি করেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক নূর খান।