খাগড়াছড়ি শহরে পাহাড়িদের দুই দলের সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন অন্তত ছয়জন।শহরের স্বনির্ভর বাজার এলাকায় শনিবার সকালের এই সংঘাতের জন্য পাহাড়ি সংগঠন ইউপিডিএফের দুটি পক্ষকে দায়ী করেছে স্থানীয় প্রশাসন।সংঘর্ষে আহত তিনজনকে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে। হতাহত কারও নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গোলাগুলি শুরু হয়ে চলে একটানা প্রায় আধা ঘণ্টা।গোলাগুলির সময় স্বনির্ভর বাজার এলাকার বাসিন্দা ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সদস্য অমল বিকাশ ত্রিপুরা বলছিলেন, আমরা আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় আছি। ঘর থেকে বের হতে পারছি না।সকাল ৯টার পরও থেমে থেমে গুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল।বেলা ১১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার কথা জানান খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আলী আহমদ খান।তিনি বলেন, এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে। এলাকা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে আছে।খাগড়াছড়ি শহরের স্বনির্ভর বাজার এলাকায় শনিবার পাহাড়িদের দুই দলের সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন অন্তত ছয়জন।খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. নয়নময় ত্রিপুরা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পাঁচজনকে নিহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। আহত অবস্থায় আনা হয়েছিল চারজনকে, তাদের মধ্যে একজন হাসপাতালে মারা যান।

অন্য তিনজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে ডা. নয়ন জানান।আহতদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন সংসদ সদস্য কুজেন্দ্রলাল ত্রিপুরা, জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার আলী আহমদ খান।কারা এই সংঘর্ষে ছিল- জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের বলেন, ইউপিডিএফের প্রসিত গ্র“প ও ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) এই দুই পক্ষ গোলাগুলিতে জড়িত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।খাগড়াছড়ি শহরের স্বনির্ভর বাজার এলাকায় শনিবার পাহাড়িদের দুই দলের সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন অন্তত ছয়জন।পার্বত্য শান্তিচুক্তিবিরোধী প্রসিত বিকাশ খিসা নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফের প্রভাব বেশি খাগড়াছড়িতে। ভাঙনের পর দুটি দলের মধ্যে সংঘাত লেগে আছে।এবছরের ৩ জানুয়ারি খাগড়াছড়িতে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয় ইউপিডিএফের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা মিঠুন চাকমাকে। এই হত্যার জন্য ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিককে দায়ী করেছিল ইউপিডিএফ।এরপর ১৭ ফেব্র“য়ারি খাগড়াছড়ি শহরের হরিনাথপাড়া এলাকায় ইউপিডিএফকর্মী দীলিপ কুমার চাকমাকে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। তার চার দিন পর খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় সুভাষ চাকমা নামের আরেক ইউপিডিএফকর্মী খুন হন।গত ১৬ এপ্রিল খাগড়াছড়ি শহরের পেরাছড়া এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় সূর্য বিকাশ চাকমা নামে একজন নিহত হন। তিনিও ইউপিডিএফের দুই অংশের বিরোধের কারণে মারা গেছেন বলে ধারণা করা হয়।এরপর গত ৪ মে খাগড়াছড়ি থেকে রাঙামাটি যাওয়ার পথে খুন হন ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিকের অন্যতম শীর্ষ নেতা তপন জ্যোতি চাকমা বর্মাসহ পাঁচজন।