খাগড়াছড়িতে প্রকাশ্য দিবালোকে প্রতিপক্ষের গুলিতে ইউপিডিএফের (প্রসীত) তিন নেতাসহ সাতজন নিহতের ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের পর দুদিন পেরিয়ে গেলেও নিহতদের স্বজনরা মামলা না করায় ন্যায়বিচারের স্বার্থে পুলিশ বাদী হয়ে সোমবার সকালে এ মামলা করেছে। খাগড়াছড়ি সদর থানায় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি সাহাদাত হোসেন টিটো। তিনি জানান, শনিবার হত্যাকাণ্ডের পর ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও মৃতদের স্বজনরা থানায় মামলা করতে আসেনি। তাই সোমবার পুলিশের এসআই গৌতম চন্দ্র দে বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনকে আসামি করে খাগড়াছড়ি সদর থানায় হত্যা মামলা করে।

এদিকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু ইউসুফকে আহ্বায়ক ও সদর উপজেলা ইউএনও সৈয়দ শামসুল তাবরীজকে সদস্য সচিব করে ৫ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছে ইউপিডিএফ সমর্থিত চার সংগঠন। সোমবার সংবাদমাধ্যমে প্রেরিত প্রেস বিবৃতিতে ইউনাইটেড পিপলস্ ডেমোক্রাটিক ফ্রন্টভুক্ত (ইউপিডিএফ) চারটি সংগঠন খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভর-পেরাছড়া হত্যাকাণ্ড তদন্তের জন্য খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু ইউসুফ আলীকে প্রধান করে গঠিত কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে অবিলম্বে সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে।

গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি অঙ্গ মারমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি বিনয়ন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভানেত্রী নিরূপা চাকমা ও ইউনাইটেড ওয়ার্কার্স ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের সভাপতি সচিব চাকমা এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানান। তারা বলেন, প্রকাশ্যে জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ বাজার স্বনির্ভরে এত বড় হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষে নিরপেক্ষভাবে এ ঘটনার তদন্ত করা কখনই সম্ভব নয়।

প্রেস বিবৃতিতে খাগড়াছড়ির স্বনির্ভর-পেরাছড়া হত্যাকাণ্ডকে ঠাণ্ডা মাথায় সংঘটিত একটি পূর্বপরিকল্পিত গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করে নেতৃবন্দ বলেন, এই বর্বর হত্যাযজ্ঞ কেবল ২০১৬ সালের ১ জুলাই ঢাকার গুলশানে হোলি আর্টিজানে সংঘটিত ইসলামি জঙ্গিদের হামলার সঙ্গে তুলনীয়।

উল্লেখ্য, শনিবার খাগড়াছড়িতে প্রকাশ্য দিবালোকে প্রতিপক্ষের গুলিতে ইউপিডিএফের (প্রসীত) তিন নেতাসহ সাতজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার জন্য প্রতিপক্ষের আঞ্চলিক সংগঠন জেএসএস (এমএন লারমা) ও ইউপিডিএফকে (গণতান্ত্রিক) দায়ী করেছে প্রসীত খীসার নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফ। কিন্তু ঘটনার সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্তা অস্বীকার করে জেএসএস (এমএন লারমা) ও ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক)।