অনুরোধের পরও রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জাতিগত নির্মূল অভিযানের নিন্দা জানাতে অস্বীকার করছেন মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সুচি। তাই তাকে দেওয়া ফ্রিডম অফ এডিনবার্গ পুরস্কার প্রত্যাহার করে নিচ্ছে এডিনবার্গের লর্ড প্রোভেস্ট ফ্রাংক রোস।

ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান ও এডিনবার্গ নিউজের খবরে বলা হচ্ছে, গত নভেম্বরে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নিপীড়ন বন্ধ করতে সুচিকে তার অপরিমেয় নৈতিক সাহস ও প্রভাব খাটাতে আহ্বান জানিয়েছেলেন এডিনবার্গের লর্ড প্রোভেস্ট ফ্রাংক রোস। রোহিঙ্গারা যাতে নিরাপদে নিজেদের আবাসস্থলে ফিরতে পারেন, সেই সুযোগ দেয়ারও অনুরোধ করা হয়েছিল তাকে। কিন্তু বারবার তাদের অনুরোধ কানে না তোলায় তাকে দেওয়া ফ্রিডম অফ এডিনবার্গ পুরস্কার প্রত্যাহার করে নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অনবদ্য অবদান রাখায় ২০০৫ সালে অং সান সুচিকে ফ্রিডম অফ এডিনবার্গ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। এ পর্যন্ত তাদের প্রদান করা অক্সফোর্ড, গ্লাসগো ও নিউ ক্যাশলের ফ্রিডম অফ সিটি অ্যাওয়ার্ডসহ মোট সাতটি পুরস্কার বাতিল করা হয়।

এডিনবার্গ কর্তৃপক্ষ জানায়, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা তখন তাকে গৃহবন্দী করে রেখেছিল, তখন এডিনবার্গ কর্তৃপক্ষ তাকে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। নিপীড়নের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছিল তাকে। সে সময় স্কটল্যান্ডের রাজধানী এডিনবার্গের নাগরিকত্ব দিয়ে সম্মানিত করার পাশাপাশি মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য তার অক্লান্ত পরিশ্রমকে প্রকাশ্য সমর্থন দেওয়া হয়েছিল।

রাখাইনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সহিংসতার বিরুদ্ধে কথা বলতে বারবার অনুরোধ করা হলেও দেশটির একজন স্টেট কাউন্সিলর হিসেবে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। দেশটিতে ঘটে যাওয়া নির্মম হত্যাকাণ্ডের চিত্র দেখে জাতিসংঘও সেটিকে জাতিগত নির্মূল অভিযান বলে আখ্যা দিয়েছিল। সুচির সামনে এই অপধ্যায়কে নির্মূল করার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু তিনি আড়ষ্ট থাকায় তাকে দেওয়া সম্মান ফিরিয়ে নেওয়া হলো।

১৮০৮ সালে সর্ব প্রথম ফ্রিডম অফ এডিনবার্গ পুরস্কার দেওয়া হয়। এর আগে ব্রিটেনের রাণী, প্রিন্স ফিলিপ, স্যার সিয়েন কোনারি, নেলসন ম্যান্ডেলা, স্যার ক্রিস হয় ও অধ্যাপক পিটার হিগসকেও এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল।