স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী জুন-জুলাইতে ইলিশ পাওয়ার কথা থাকলেও এতদিন জেলেরা ইলিশের দেখা পায়নি। দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে তদের জালে ইলিশ পড়া শুরু হয়েছে। যদিও এর পরিমান গত বছরের চেয়ে এখনো বেশী নয়, তবুও ইলিশের দেখা পাওয়ায় ভোলার জেলেপল্লি এবং মৎস্য অবতরণকেন্দ্র। গুলো মূখরিত হয়ে উঠছে। দেরীতে ইলিশের দেখা মিললেও সামনের দিকে গত বছরের চেয়ে বেশী ইলিশ পাওয়া যাবে বলে আশা করছে মৎস্য বিভাগ।

মৌসূমের শুরুতে ইলিশ না পাওয়ায় গত দু’মাস চরম হতাশার মধ্যে দিন কাটিয়েছেন ভোলার ৩ লাখেরও বেশী জেলে।
সংসারের ব্যয়ভার নির্বাহ তো দূরের কথা, খরচের টাকাও তারা তুলতে পারছিলেন না এতোদিন। এখন নদীতে ইলিশের দেখা পাওয়ায় বিগত দিনের ক্ষতি পূষিয়ে উঠার আশায় বুক বেঁধে চলছেন তারা। সবচে’ বেশী ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে জেলার মনপুরা, ঢালচর ও চরনিজামের মেঘনা মোহনায়। ইলিশ পড়া শুরু হলেও জেলে ও ব্যবসায়ীরা এখনো লাভের মূখ না দেখায় দাম তেমন একটা কমছে না।

জেলার ৭ উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১শত ২৭ টি মৎস্য অবতরণকেন্দ্র রয়েছে। এসব কেন্দ্রে আড়ৎ রয়েছে ১ হাজার ২শ।
বর্তমানে প্রতিটি কেন্দ্র থেকে বরিশাল চাঁদপুর ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার মোকাম গুলোতে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ ঝুরি ইলিশ যাচ্ছে। কয়দিন আগেও যার পরিমান ছিল ৫ থেকে ৬ ঝুরি। যদিও এখনো কাঙ্খিত পরিমান ইলিশ পাওয়া যাচ্ছেনা তবুও আগের চেয়ে প্রাপ্ত ইলিশের পরিমান কয়েকগুণ বেশী হওয়ায় দারুণ খুশি জেলে ও ব্যবসায়ীরা। মৎস্য বিভাগ ভোলার মতে, জলবায়ূর বিরূপ প্রভাবে ইলিশের অবস্থান এবং পরিমানে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটছে। গত বছর সাগরে ইলিশ কম ছিল, নদীতে ছিল বেশী। এ বছর সাগরে ইলিশ বেশী, নদীতে ধরা পরছে কম।

ইলিশ প্রজনন মৌসূমে মা ইলিশের জন্য নিরাপদে ডিম ছাড়ার ব্যবস্থা নেয়াসহ জাটকা রক্ষায় সরকারের গৃহীত নানা কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের কারণে এবছর দেরীতে হলেও অধিক পরিমাণে ইলিশ পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন ভোলার এই মৎস্য কর্মকর্তা।

এব্যাপারে সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো: আসাদুজ্জামান বলেন, প্রভাবশালীরা বিভিন্ন ধরণের অবৈধ জাল ব্যবহার করে যেহারে অবাধে ইলিশের রেণুপোনা ধ্বংস করেছে তা সঠিক সময়ে বন্ধ করা সম্ভব হলে আরো বেশী পরিমান ইলিশ পাওয়া যেত বলে মনে করছেন-ভোলার ইলিশ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও বিশেষজ্ঞরা।

ফয়সল বিন ইসলাম নয়ন, ভোলা প্রতিনিধি