ভোলার ৭টি উপজেলার ছোট-বড় ২৫ রুটে প্রশাসনের নিশেজ্ঞা অমান্য করে ঝুকিপূর্ণ নৌ-যান চলাচল করছে। প্রতিদিন এসব রুট দিয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে উওাল মেঘনা পাড়ি দিচ্ছেন হাজার মানুষ। ঝুকিপূর্ণ পারাপারে কারনে একের পর এক নৌ-দুর্ঘটনা ঘটলেও স্থানীয় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা। গত ৭ বছরে ছোট-বড় দুর্ঘটনায় ৩ শতাধিক যাএী মারা গেছে। এছাড়া নিখোজ রয়েছে অন্তত আরো শতাধিক মানুষ।

সুএে জানা গেছে, ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক দুর্ঘটনা ঘটে। ট্রলার দুর্ঘটনার মধ্যে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটে গত বছরের ১১ জুন। মনপুরার মেঘনায় যাএীবাহি এই ট্রলার ডুবির ঘটনায় ১২ জন নিহত হয়েছে। এছাড়াও সরাবছর ছোট-খাট দুর্ঘটনায় আরো দেড়শ নিহত হয়েছে বলে বিআইডব্লিটিএ সুএ জানিয়েছে।

অন্যদিকে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটে ২০০৯ সালে কোকো ট্রাজেডি। সেই দুর্ঘটনায় ৮৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাএীদের অভিযোগ, নিয়মিত অভিযান, নৌ-যানের ফিটনেস পরীক্ষা না করা চালকদের প্রশিক্ষণ না থাকা জীবন রক্ষাকারি লাইফ জেকেট, বয়া, বৈরী আবহাওয়া সতর্কতা জারী না করা ও দুর্ঘটনার তদন্ত না করার ফলে কোন নিয়ম মানছে না ট্রলার মালিকগন।
নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই ডেঞ্জার জোন পয়েন্ট দিয়ে পারাপার হচ্ছে নৌ-যান। এতে চরম ঝুকির মধ্যে পড়ছে যাএীদের জীবন। অভিযোগ উঠেছে, ঘাটগুলোতে প্রভাবশালী চক্র ইজারাদার থাকায় প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধ এসব নৌ-যান চললেও কোন অভিযান নেই প্রশাসনের।

সুএ আরো বলছে, ভোলার জলসীমার ১শ ৯০কিলোমিটার এলাকাকে ডেঞ্জার জোনের আওতায় আনা হয়েছে, ওইসব পয়েন্টে ১৫ মার্চ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত সি সার্ভে ছাড়া সকল ধরনের নৌ-যান চলাচলে নিশেধাজ্ঞা জারী করা হয়। কিন্তু সে নিয়ম মানা হচ্ছেনা ভোলার ২৫টি রুটে। বিশেষ করে ভোলা-লক্ষীপুর, তজুমদ্দিন-মনপুরা, ধুলিয়া-ভেলুমিয়া, নাজিরপুর-কালাইয়া, দৌলতখান-সন্দ্বিপ, ইলিশা-বরিশাল রুটে ঝুকি অনেক বেশী। খোজ নিয়ে জানা গেছে, ইঞ্জিন চালিত ফিটনেস ও অনুমোদনবিহীন অবৈধ ইঞ্জিন চালিত ট্রলারগুলোর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। জেলা সদরের সাথে বিচ্ছিন্ন মনপুরা ও হাতিয়াসহ অভ্যন্তরীণ চরের যোগাযোগের একমাএ ভরসা নৌ-পথ।

তাই এসব চরের সংযোগ পথেই চলছে অবৈধ ছোট ছোট ট্রলার। ঝুকিপূর্ণ রুটগুলোর মধ্যে হাজিরহাট-কলাতলী, খিজিরখাল-চেয়ারম্যানের ঘাট, মনপুরা-তজুমদ্দিন,রামনেওয়াজ-কলাতলী, হাজিরহাট-মঙ্গল সিকদার, মনপুরা-ঢালচর, হাজিরহাট-চরফ্যাশন, জনতা বাজার-চরফ্যাশন,মনপুরা-সন্দ্বিপ ও মনপুরা-চর নিজাম উল্লেখযোগ্য। এসব রুট সুস্ক মৌসুমে শান্ত থাকলের বর্ষাও মৌসুমে অশান্ত হয়ে উঠে। এছাড়াও ডেঞ্জার জোনের আওয়াতায় রয়েছে বেশীরভাগ রুট।
মনপুরার রামনেওয়াজ ঘাটের যাএী আবুল কাশেম, রহিম, সালাউদ্দিন, লোকমান ও সিরাজ জানান, প্রযোজনের তাগিদে আমরা জীবন বাজি রেখেই যাতায়াত করি। যে কোন সময় দুর্ঘটনার আশংকা থাকে। নিরাপদ নৌ-যান চললে যাএীদের এমন ঝুকি নিতে হতো না। হাজিরহাট এলাকার লোকমান হসেন বলেন, ট্রলারগুলোর একটিও ফিটনেস নেই, বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করেই তারা উওাল নদী পার হয়। যাএীরা বাধা দিলেও জোরপূর্বক যাএী উঠিয়ে তারা পারাপার হচ্ছেন। এব্যাপারে ভোলা বিআইডব্লিটিএ ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক মো: নাছির বলেন, উওাল মেঘনায় ট্রলার চলাচলে নিশিদ্ধ করা হয়েছে। তারপরেও যদি কেউ চলাচল করে তাদেও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ফয়সল বিন ইসলাম নয়ন, ভোলা প্রতিনিধি