মুক্তিপণ দাবির ২৮ ঘণ্টা পর রাজধানীর তেজগাঁও এলাকা থেকে তোয়াসিন ইসলাম সিমন (৪) নামে অপহৃত এক শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে তেজগাঁও ফ্লাইওভার সংলগ্ন এলাকা থেকে ওই শিশুকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রোমান নামের এক ব্যক্তি ও তার স্ত্রীসহ ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার এ কথা জানান।

বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘গত ২৮ আগস্ট রাত পৌনে ৯টার দিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের লিচু বাগান এলাকার ৩৪১/১ বাসার সামনে খেলছিল সিমন। এ সময় তার বাবা সাইফুল ইসলামের প্রতিবেশী রোমান কৌশলে সিমনকে তুলে নিয়ে গিয়ে অপহরণের নাটক সাজায়। ওই রাতেই নিখোঁজ শিশুটির সন্ধান চেয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন সাইফুল। পরদিন দুপুর ২টার দিকে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে অপহৃতের মা-বাবাকে জানানো হয়, সিমন তাদের জিম্মায়। মুক্তিপণ বাবদ দিতে হবে ২০ লাখ টাকা। ১০ লাখ টাকায় সমঝোতাও হয়।’

বিপ্লব কুমার আরও বলেন, ‘বিষয়টি পুলিশ অবহিত হওয়ার পর ওই নম্বরের সূত্র ধরে বুধবার মধ্যরাতে বিজয় স্মরণীর পিরমা মসজিদের গলির পাশের খোলা মাঠ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। আটক করা হয় ঘটনায় জড়িত দুজনকে। তাদের দেওয়া তথ্যমতে মোহাম্মদপুর, শেরে বাংলানগর ও মহাখালী এলাকা থেকে আরও চারজনকে আটক করা হয়।’

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা জানায়, রোমান এই অপহরণের মূল পরিকল্পনাকারী। যে মোবাইলটি ব্যবহার করে মুক্তিপণ চাওয়া হয় সেটি এক সময় রোমানই ব্যবহার করত। ঘটনার নেপথ্যে থেকে রোমান নিজেই অপহৃতের বাবা সাইফুল ইসলামের সঙ্গে থেকেছেন। সান্ত্বনা দিয়েছেন। সমঝোতার জন্য কথা বলেছেন, যাতে করে অপহরণের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা কেউ ধরতে না পারে। সেজন্য নিখোঁজ সংবাদ প্রচার করতে মাইকিংও করেন রোমান।’

বিপ্লব কুমার বলেন, ‘অপহরণের বিষয়ে রোমান নিজেই সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেছেন। এ ক্ষেত্রে ম্যাজিক ভয়েস নামে টুলস ব্যবহার করেন রোমান। ফলে তার কণ্ঠ বিকৃত হওয়ায় বোঝার উপায় ছিল না। অপহরণকারীদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২০ বছরে মধ্যে। তারা গ্যাং হিসেবে এর আগেও কোনো অপহরণের কাজে জড়িত ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় সবাইকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে। অপহরণে আরেক নারী সহযোগী পলাতক রয়েছেন, তাকেও গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’