প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, দেশে সাক্ষরতার হার ৭২ শতাংশ ৯ শতাংশ। গতবার এই হার ছিল ৭২ দশমিক ৩ শতাংশ।বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য তুলে ধরেন মন্ত্রী। আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি সম্পর্কে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মন্ত্রী বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সূত্র উল্লেখ করে প্রাথমিক শিক্ষাসংক্রান্ত নতুন উপাত্ত তুলে ধরেন।পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা কত দিন চলবেÑসাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘যত দিন সরকার এই সিদ্ধান্ত বহাল রাখবে, তত দিন প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা চলবে।আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার বিষয়টি এখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর্যায়ে আছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হলে এটার বাস্তবায়ন হবে।

গণশিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের নিরলস চেষ্টায় দেশে সাক্ষরতার হার ৭২ দশমিক ৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।পরিসংখ্যান ব্যুরোর এই হিসাব তুলে ধরে ফিজার বলছেন, গতবার এই হার ছিল ৭২ দশমিক ৩ শতাংশ।‘সাক্ষরতা অর্জন করি, দক্ষ হয়ে জীবন গড়ি’ স্লোগানে এবার বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালন করা হবে।৮ সেপ্টেম্বর সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শিল্পকলা অ্যাকাডেমি পর্যন্ত র‌্যালি এবং এই অ্যাকাডেমিতে আলোচনা সভা হবে। এছাড়া জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সাক্ষরতা দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান গণশিক্ষা মন্ত্রী।

উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার কার্যক্রম এক সময় বন্ধ ছিল জানিয়ে ফিজার বলেন, এই সরকার ২০১৪ সালে নিরক্ষরদের সাক্ষরজ্ঞান করতে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে ৪৫২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়।আমাদের লক্ষ্য যতক্ষণ একজন নিরক্ষর মানুষ থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত সরকার এটা চালিয়ে যাবে।জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী ২০১৮ সালের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষার স্তর অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করার কথা। এ বিষয়ে অগ্রগতি কতটা- সেই প্রশ্ন করা হয়েছিল গণশিক্ষা মন্ত্রীর সামনে।উত্তরে ফিজার বলেন, এটা এখনও বাস্তবায়ন করা যায়নি, প্রসেস চলছে। আমরা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত চালাচ্ছি। আমাদের ৭০০ স্কুলে ষষ্ঠ, সপ্তম এবং অষ্টম শ্রেণি খুলেছি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের অধীনে থাকা বিদ্যালয় থেকে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণিগুলো ছেড়ে দিলে তা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়া হবে বলে জানান ফিজার।এটা উনারা ছেড়ে দেবেন, আমরা শুরু করব। এটার প্রসেস নিয়ে অনেক টানাপোড়েন আছে, এটা কেবিনেট পর্যন্ত গেছে। এটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে, পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হলে নিশ্চয়ই সেটার বাস্তবায়ন আমরা করব।সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন উন্নীতের বিষয়টি সরকারের কাছে তুলে ধরা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এটি বাস্তবায়নের ব্যাপারটাও সরকারের। প্রাথমিক শিক্ষার মন্ত্রী যদি বলে দেয় তাহলে এটা হবে না।সরকার যখন সিদ্ধান্ত নেবে তখন এটা হবে, তবে এটা পরিত্যক্ত হয়নি, তাদের দাবি প্রত্যাখ্যাতও হয়নি। তাদের বিষয়টি যুক্তিযুক্তভাবে আলোচনা করা হচ্ছে।”

মন্ত্রী বলেন, আর কয়েক মাসের মধ্যে নির্বাচন হবে, ৃ আমি মনে করি যারা আন্দোলন করছেন তারাও বুঝবেন যে আওয়ামী লীগ সরকারই শিক্ষার জন্য, সরকারি কর্মচারীদের বেতন ও সম্মান বৃদ্ধি করেছেন।আমি মনে করি তাদের আশ্বস্ত থাকা দরকার, এই সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলেই বরং তাদের আশাটা পূর্ণ হতে পারে বলে আমি মনে করি। আমি আহ্বান জানাব কোনো হটকারি কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে তাদের অপেক্ষা করা দরকার।সরকারের কাছ থেকে সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত পঞ্চম শ্রেণিতে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা চলতে থাকবে বলে জানান গণশিক্ষা মন্ত্রী।প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আসিফ-উজ-জামান, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক তপন কুমার ঘোষ ছাড়াও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।