ভোলার তজুমদ্দিনে ৫০ শয্যা নির্মানাধীন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেকসে ডাক্তার না থাকায় ভেঙ্গে পড়েছে চিকিৎসা সেবা। উপজেলার একমাত্র সরকারি হাসপাতালটিতে বর্তমানে অন্য উপজেলা থেকে এক চিকিৎসক ধার করে (ডেপুটেশন) এনে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে প্রায় দুই লক্ষ্য মানুষের চিকিৎসা সেবা। হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, তজুমদ্দিন উপজেলায় ৩১ শষ্যার (৫০ শয্যা নির্মানাধীন) একমাত্র সরকারি হাসপাতালটিতে ডাক্তার সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন পদ শূন্য ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাব একের পর এক সমস্যায় জর্জরীত হয়ে পড়ায় মারাক্তক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে এখানকার চিকিৎসা সেবা।

বর্তমানে হাসপাতাল ও ইউনিয়ন কোটায় প্রথম শ্রেনির মোট ১৫ জন ডাক্তারের স্থলে কাগজ কলমে কর্মরত দেখাচ্ছেন চার জন। এদের একজন ডাক্তার মিজানুর রহমান স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তার পদে দায়িত্ব পালন করছেন। সহকারী ডেন্টাল সার্জন পদে কর্মরত আছেন ডাঃ ফখরুল আলম। মেডিকেল কর্মকর্তা ডাক্তার আবদুল্লাহ আল আমিন প্রেষনে রয়েছেন লালমোহন। অপর মেডিকেল কর্মকর্তা ইউনানী ডাক্তার রাজিব চন্দ্র দাস প্রেষনে রয়েছেন বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে।

এদিকে তজুমদ্দিন হাসপাতালে ডাক্তার সংকটের কারণে পার্শ্ববর্তী উপজেলা বোরহানউদ্দিন হাসপাতাল থেকে ডাক্তার মমিনুল ইসলামকে ডেপুটেশনে (ধার করে) এনে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। গত ৬ সেপ্টেম্বর বেলা ১২ টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে বহির্বিভাগে রোগীদের ভীড়। বোরহানউদ্দিন থেকে ডেপুটেশনে আসা ডাঃ মমিনুল ইসলাম দোতালার বেডে (ইনডোর) রোগী দেখার পর কোন মতে সামাল দিচ্ছেন বহির্বিভাগ। অতিরিক্ত রোগীর কারণে জরুরী বিভাগে বসেও রোগী দেখছেন স্যাকমো বিটন চন্দ্র কর।

বুধবার বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেয়া রোগীর সংখ্যা ছিল ২৬৯ জন। ফলে উপজেলার একমাত্র সরকারী হাসপাতাটিতে এসে ভোগান্তিতে পড়ছে রোগীরা। মানাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। ভর্তি হওয়া রোগীদের চিকিৎসা সেবা নির্ভর করছে ডেপুটেশনে (ধার করা) আসা একজন ডাক্তারের উপর। একদিকে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা অন্যদিকে একজন ডাক্তার সেবা দিতে গিয়ে পড়ছেন মারাক্তক হিমশিমের মধ্যে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মিজানুর রহমান বলেন, দৈনন্দিন আউটডোরে প্রায় তিন শতাধিক রোগী আসে। সকাল থেকে ইনডোরে রোগী দেখার পর আউটডোরেও এত রোগী দেখা একজনের পক্ষে সম্ভব হয় না। তাই ডাক্তারের পাশাপাশি স্যাকমো, ডেন্টিস, নার্সরাও রোগী চিকিৎসা দিতে বাধ্য হন।জরুরী ভিক্তিতে এখানে ডাক্তারের প্রয়োজন।
এছাড়াও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেকসের জনবল সংক্রান্ত তথ্য থেকে জানা গেছে, ৯ জন সিনিয়র স্টাফ নার্সদের মধ্যে রয়েছে ৫ জন। স্যাকমো, মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট, ফার্মাসিস্ট, স্টোর কিপার, পরিসংখ্যান বিদ, সিএইচসিপি, সহকারী নার্স সহ তৃতীয় শ্রেণীর ৮৫ টি পদের বিপরিতে কর্মরত আছে ৪৭ জন।

এদের মধ্যেও অনেকে ডেপুটেশনে উপজেলার বাহিরে কর্মরত আছেন। ৪র্থ শ্রেণীর ১৯ জন কর্মচারীর মধ্যে রয়েছে মাত্র ৯ জন। এদিকে এক্সরে টেকনিশিয়ানের অভাবে দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগ ধরে তালা ঝুলছে এক্সরে কক্ষটিতে। এব্যাপারে ভোলা সিভিল সার্জন ডাঃ রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, ভোলা জেলায় অনেক ডাক্তারের পদ শূন্য। বিষয়টি বিভাগীয় পরিচালককে জানিয়েছি এবং প্রতি মাসেই শূন্য পদের বিপরীতে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। শীঘ্রই তজুমদ্দিনে ডাক্তার দেওয়া হবে বলে পরিচালক মহোদয় জানিয়েছেন।