জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরিকল্পনাকারীকের চিহ্নিত করতে কমিশন গঠনের কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর)জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য মো. আবদুল¬াহর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী একথা জানান।

তিনি বলেন,আওয়ামী লীগ পরপর দু‘বার সরকার গঠনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পূর্বে ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে অনেক তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। এতে দেখা যায়, পরোক্ষভাবে দেশি ও বিদেশি কিছু লোক ও সংস্থা বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। এজন্য জাতির পিতাকে হত্যার অন্যান্য পরিকল্পনাকারীদের চিহ্নিত করার জন্য কমিশন গঠনের বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে।বঙ্গবন্ধু হত্যার পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে আনার বিষয়টি সরকারের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে উলে¬খ করে এই সংসদ সদস্যের প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর যেসব খুনি বিভিন্ন দেশে পালিয়ে আছে এবং আশ্রয় গ্রহণ করেছে, তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার সব প্রকার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। এ বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি সম্মিলিতভাবে কাজ করছে।এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, কানাডায় বসবাসরত পলাতক আসামি নূর চৌধুরীর তথ্য দিতে ফেডারেল কোর্ট অব জাস্টিস-এর আদালতে আবেদন করা হয়েছে।পলাতক রাশেদ চৌধুরীকে আমেরিকা থেকে ফিরিয়ে আনতে কূটনৈতিক ও আইনি কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।

অসচেতনভাবে যত্রতত্র রাস্তা পারা হওয়া পথচারীদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ড্রাইভারের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। কিন্তু যত্রতত্র রাস্তা পার হওয়াদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলে এটি থামবে। তাছাড়া এটি থামবে না। এছাড়া ট্রাফিক নিয়মটা স্কুল থেকে আস্তে আস্তে শেখানো উচিত।বুধবার জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির নূরে হাসনাত লিলি চৌধুরীর সম্পূরক প্রশ্নের একথা বলেন তিনি। এসময় শেখ হাসিনা বলেন, সড়কের দুঘর্টনা দূর করার জন্য আমরা যতই পদক্ষেপ নেই না কেন, আমাদের দেশের মানুষের অদ্ভুত মানসিককতা- তারা রাস্তা পারাপারের সময় হাত দেখায়! দ্রুতযান হাত দেখানোর সাথে সাথে থেমে যেতে পারে না। কিন্তু আমরা কী দেখি, ছোট্ট শিশুর হাত ধরে মা রাস্তা পার হচ্ছেন। অথবা বাবা বাচ্চাদের নিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। রাস্তায় অনবরত গাড়ি আসছে অথচ খুব কাছেই ফ্লাইওভার থাকলেও এভাবে পার হচ্ছেন। এমনকি যুব ছেলেমেয়েরাও এ কাজ করছেন। ফ্লাইওভার দিয়ে পার না হয়ে দৌঁড় মেরে পার হতে চায়। তার ফলে অ্যাক্সিডেন্ট হয়। আর অ্যাক্সিডেন্ট হলে যারা রাস্তা পারাপার হচ্ছে তাদের দোষ কতটুকু আর ড্রাইভারের দোষ কতটুকু সেটাও বিবেচ্য বিষয়।

তিনি বলেন,আরেকটি বিষয় আমি দেশবাসীকে বলব সেটা হলো, কোনো একটি অ্যাক্সিডেন্ট হলে ড্রাইভার তখন নিজের জীবন বাঁচাতে দ্রুত চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। ফলে যার বাঁচার সম্ভাবনা সেও আর বাঁচে না। ড্রাইভার পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে কারণ যে ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেল তাকে সাহায্য করার চেয়েও বেশি আগ্রহ থাকে ড্রাইভারকে টেনে নামিয়ে কীভাবে মারধর করা যায় এবং মারতে মারতে এমনও ঘটনা ঘটে মেরেই ফেলে! আইন কারো হাতে তুলে নেয়া উচিত নয়। ধরে পুলিশে দেবে, কিন্তু কেউ মারধর করতে পারবে না। এই মারধর যদি বন্ধ হয়ে তাহলে অনেক অ্যাক্সিডেন্টে কিন্তু মানুষ বেঁচে যায়। এটি হলো বাস্তবতা। আর দ্বিতীয় কথা হচ্ছে পারাপারের সময় সকলকেই ট্রাফিক আইনটা মেনে চলা উচিত।শিশু আন্দোলনের কথা উলে¬খ করে তিনি বলেন, এতবড় একটি ঘটনা ঘটল, আন্দোলন হলো তারপরও আমরা দেখি মানুষের মধ্যে সেই সচেতনতা নেই। তারা যত্রতত্র রাস্তা পার হচ্ছে। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত এক ছবির বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, এক বাবা তার শিশু সন্তানকে নিয়ে এমন ভাবে রাস্তা পার হচ্ছিলেন বাবার পা একটু পিছলে গেলেই ফেন্সের সরু মাথা তার শরীরে গেঁথে যাবে। কেউ রাস্তা পার হতে একটা মিনিট সময় নেবে না, অথবা ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করবে না।এই বিষয়টিও সবার দেখা দরকার।রাস্তা পারাপারা সব ব্যবস্থার কথা উলে¬খ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের মানুষের একটু সচেতন হওয়া উচিত। ছোট শিশুকে নিয়ে হঠাৎ দৌঁড় দিয়ে রাস্তা পার হওয়া বা দু’টি বাস দাঁড়িয়ে আছে তার ফাঁক দিয়ে বেরুতে দিয়ে অ্যাক্সিডেন্ট হলো। গাড়িতে বসে মাথা বা হাত বের করে রাখা তখন তো অ্যাক্সিডেন্ট হতেই পারে।