সাবেক রাষ্ট্রপতি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, জাতীয় পার্টি আর কোনো দলের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হবে না। সাধারণ মানুষের মাঝে জাতীয় পার্টির শক্তিশালী অবস্থান আছে। আমি নিশ্চিত সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জাতীয় পার্টি মানুষের ভালোবাসায় রাষ্ট্রক্ষমতায় যাবে।মঙ্গলবার সকালে বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক সম্মেলন সিটির এক্সপো জোনে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এরশাদ বলেন, দলকে আরও সংগঠিত করতে হবে। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি করতে হবে। শক্তি সঞ্চয় করতে হবে, কেউ ভোট ডাকাতি করতে চাইলে প্রতিহত করতে হবে।উদ্বোধনী বক্তৃতায় তিনি আরও বলেন, জাতীয় পার্টির ৯ বছরের শাসনামল না এলে বাংলাদেশ অন্ধকারেই নিমজ্জিত থাকত। ব্রিটিশ বা পাকিস্তান আমলের অবস্থাতেই থেকে যেত বাংলাদেশ।জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, আমরা উন্নয়ন করেছি, আমরা লুটপাট করিনি। আমাদের দেশ পরিচালনায় খুন, গুম, সন্ত্রাস ছিল না। আমরা মানুষ খুন করিনি, আমাদের হাতে রক্তের দাগ নেই।দেশের মানুষ আমাদের ভালোবাসে, মানুষ আবারো জাতীয় পার্টির শাসনামল ফিরে পেতে চায়।

সাবেক এ রাষ্ট্রপতি বলেন, আগামী নির্বাচনে তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর প্রচারণায় আমরা সাধারণ মানুষের কাছে যাব। নতুন ভোটারদের আকৃষ্ট করব। নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করব, মানুষের মুখে হাসি ফোটাবো আমরাই।ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার পর থেকে অমানুষিক নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, আমার মতো নির্যাতিত নেতা আর কেউ নেই। এত নির্যাতনের পরও শুধু আল্লাহর রহমত আর মানুষের ভালোবাসায় বেঁচে আছি। মানুষ আমাদের ভুলে যায়নি, আমরা ক্ষমতায় যেতে এখন প্রস্তুত।

তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে ৫০৮৮টি এবং আওয়ামী লীগ ৬০০০ মামলা রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করেছে। কিন্তু আমার নামে মামলাগুলো এখনো আছে।কারণ জাতীয় পার্টিকে সবাই ভয় পায়, সাধারণ মানুষের মাঝে জাতীয় পার্টির শক্তিশালী অবস্থান আছে, যোগ করেন তিনি।জাতীয় নির্বাচনে আধুনিক ও তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর প্রচারণা শুরুর আগে কর্মসূচিভিত্তিক আলোচনা ও পর্যালোচনাবিষয়ক কর্মশালায় বিভিন্ন বিষয়ে সেশন পরিচালনা করেন পার্টি চেয়ারম্যানের তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা শফিউল্লাহ আল মুনির, পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা ও প্রেসিডিয়াম সদস্য আজম খান।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, ইসলামী মহাজোটের চেয়ারম্যান আবু নাছের ওয়াহেদ ফারুক, বিএনএ চেয়ারম্যান সেকান্দার আলী মনি উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বন ও পরিবেশমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য এমএ সাত্তার, কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি, অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, মো. হাফিজ উদ্দিন, সৈয়দ আবদুল মান্নান, মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা, সুনীল শুভ রায়, নাসরিন জাহান রতœা এমপি, এসএম ফয়সল চিশতী, মেজর (অব.) খালেদ আকতার, সোলায়মান আলম শেঠ, অ্যাডভোকেট এম রশিদ, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, শামিম হায়দার পাটোয়ারী।এছাড়া পার্টি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, হাসান সিরাজ সুজা, নাজমা আক্তার, মেজর (অব.) আশরাফ উদ দৌলা, সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম ওমর এমপি, সেলিম উদ্দিন এমপি, মো. নোমান এমপি, অধ্যাপক নুরুল ইসলাম মিলন এমপি, রুস্তুম আলী ফরাজী এমপি, আমির হোসেন ভূইয়া এমপি, মেহজাবিন মোর্শেদ এমপি, নুরুল ইসলাম তালুকদার এমপি উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালায় সারা দেশ থেকে প্রায় তিন হাজার নেতাকর্মী অংশ নিয়েছেন। আগামীকাল বুধবার কর্মশালার সমাপনী দিনে বিকাল ৫টায় বসুন্ধরা কনভেনশন সিটির এক্সপো জোনে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর নির্বাচনী প্রচারণা, বর্তমান রাজনীতি এবং জাতীয় নির্বাচন বিষয়ে কথা বলবেন।