আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই জাতীয় সংসদে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ পাস হয়েছে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার সংসদে আইনটি উত্থাপন করলে সংসদে উপস্থিত সদস্যদের কন্ঠভোটে পাস হয়। শুরুতে স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী কাছে স্থায়ী কমিটি কর্তৃক সুপারিশকৃত ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল’ ১৮ বিবেচনা করার জন্য অনুমতি প্রার্থনা করেন মোস্তফা জব্বার।

মোস্তফা জব্বার বলেন: ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং ডিজিটাল মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধ শনাক্তকরণ, প্রতিরোধ, দমন, বিচার ও আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধান প্রণয়নকল্পে আনীত বিলটি (ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল, ২০১৮) স্থায়ী কমিটি কর্তৃক সুপারিশকৃত আকারে অবিলম্বে বিবেচনার জন্য গ্রহণ করা হউক। এসময় বিলটির জনমত যাচাইয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করেন বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য। এরপক্ষে তারা তাদের যুক্তিও উপস্থাপন করেন। এরপর আইনটি পাসের পক্ষে সংসদে বক্তব্য দেন মোস্তফা জব্বার। পরে সংসদ জনমত যাচাই এবং সংশোধনীর প্রস্তাবগুলো কণ্ঠ ভোটে বাতিল হয়ে যায়।

স্পিকারের অনুমতি পাওয়ার পর তিনি সংসদের সামনে প্রস্তাব করেন: ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং ডিজিটাল মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধ শনাক্তকরণ, প্রতিরোধ, দমন, বিচার ও আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধান প্রণয়নকল্পে আনীত বিলটি(ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল, ২০১৮) পাস করা হউক।

এরপর সেটি সংসদে কণ্ঠভোটে পাস হয়।আইনে ঔপনিবেশিক আমলের অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট অন্তর্ভুক্ত করে এর পরিধি আরো বাড়ানো হয়েছে। ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে কেউ ওই আইন ভঙ্গ করলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তার সাজা হবে। আইনের আওতায় সর্বোচ্চ সাজা হবে ১৪ বছরের কারাদণ্ড। আইনে পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তার ও তল্লাশির ক্ষমতা দেয়া হয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে।

গত ২৯ জানুয়ারি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। তখন থেকেই আইনটি নিয়ে আপত্তি ওঠে। সম্পাদক পরিষদ এই আইনের ৮,২১,২৫,২৮,২৯,৩১,৩২ ও ৪৩ ধারা নিয়ে আপত্তি জানায়। এছাড়া ১০টি পশ্চিমা দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকরা আইনের ২১,২৮,৩২ ও ২৫ ধারা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সংসদীয় কমিটির মাধ্যমে আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে। সংসদীয় কমিটি সম্পাদক পরিষদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে সংসদীয় কমিটি। কমিটি প্রতিবেদন দিতে তৃতীয় দফায় ১১ সেপ্টেম্বর এক মাসের সময় নিয়েছিল। কিন্তু পরদিনই তারা প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে। এই প্রতিবেদনে অংশীজনদের মতামতের তেমন কোন প্রতিফলন ঘটেনি।