অংশীজনদের নিয়ে ব্যক্তিগত গাড়ি বন্ধ ও নিয়ন্ত্রণে ঢাকার দুই সিটিতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।শনিবার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে ‘বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস ২০১৮’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মেয়র এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানের বিষয় যানজট ও দূষণহ্রাসে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করি, বহুমাধ্যমভিত্তিক সমন্বিত পরিবহন ব্যবস্থা গড়ি।

ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে মেয়র বলেন, ব্যক্তিগত গাড়ি বন্ধে একটি আইন রয়েছে। সামনে সমন্বয় সভা আছে। অংশীজনদের নিয়ে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি সমন্বয় সভা করবে। এই সভায় বিস্তারিত আলোচনা হবে। একজন ব্যক্তি কয়টি গাড়ি ব্যবহার করবেন, আদৌ কারো ব্যক্তিগত গাড়ির প্রয়োজন রয়েছে কি-না, বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করে উদ্যোগ নেবো।জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন থেকে ফিরে আসার পর বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করা হবে বলেও জানান মেয়র খোকন।

ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারে ভয়াবহতা উল্লেখ করে সাঈদ খোকন বলেন, অনেক পরিবারের সদস্য তিনজন। অথচ গাড়ি ব্যবহার করেন পাঁচটি। বাড়ির সাহেব অফিসে যেতে একটি গাড়ি, ম্যাডাম ব্যবহার করেন আরেকটি গাড়ি। অনেক সময় বাচ্চার স্কুলে ব্যবহার করা হয় ভিন্ন গাড়ি, বাড়ির কাজের লোক সবজি কিনতে যান অন্য গাড়ি নিয়ে। অনেক সময় ধনীর দুলালরা রেসিং কার নিয়ে রাতে দাঁপিয়ে বেড়ায়, এতে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। আমরা এটা চলতে দিতে পারি না। মেয়র আরো বলেন, মাত্র ৬ থেকে ৭ শতাংশ মানুষ ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করেন। বাকি মানুষ গণপরিবহন ও পায়ে হেঁটে চলাচল করেন। ৬ থেকে ৭ শতাংশ মানুষের জন্য নগরীর বৃহৎ জনগোষ্ঠীর কষ্ট হচ্ছে। ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য ঢাকায় যানজটের ভয়াবহ অবস্থা। এভাবে চলতে পারে না। সবাইকে নিয়মের আওতায় আনতে হবে। ব্যক্তিগত গাড়ি কমলে শহরের যানজটও কমবে। তা না হলে একজন মানুষের মোহাম্মদপুর থেকে মতিঝিল আসা-যাওয়া করতে তিন ঘণ্টা করে ছয় ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে মানুষের কাজ করার শক্তি কমে যায়।ব্যক্তিগত গাড়ি শেয়ারের আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, আপনারা জানেন সিঙ্গাপুরে নতুন কোনো গাড়ির নিবন্ধ হয় না। সবাই গাড়ি শেয়ার করেন। তাদের মতো একটা গাড়ি শেয়ার করলে ক্ষতি কি? আমরা যে ফ্ল্যাটে থাকি, সেই ফ্ল্যাটে ভিন্নতলার মানুষের সঙ্গে গাড়ি শেয়ার করতে পারি। একটা গাড়িতে একটা বাড়ির সব বাচ্চা স্কুলে যেতে পারে। শেয়ার করে গাড়ি কেনা ও মেরামত করতে পারি। এতে করে আমাদের খরচ ও পরিবেশ দু’টোই বাঁচবে। গাড়ি শেয়ার করে আরা অফিসেও যাতায়াত করতে পারি। তাহলে সবকিছু সহজ হবে।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম, অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন, উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ভারপ্রাপ্ত মেয়ার জামাল মোস্তফা,ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান প্রমুখ।