মন্ত্রী পরিষদ সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কোটা সংস্কার কমিটির প্রতিবেদন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী উল্লেখ করে এই সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড। সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আল মামুন এই হুঁশিয়ারি দেন। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা বাতিলের সুপারিশ বাতিলের দাবিতে তারা আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারক লিপি দিবেন এবং একই দাবিতে শাহবাগ চত্বরে মহা-সমাবেশ করবেন বলে জানান। সমাবেশের তারিখ পরে জানানো হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

আল মামুন বলেন, কোটা বাতিল করতে হলে সকল শ্রেণির চাকরিতে করতে হবে আর কোটা বহাল রাখতে হলেও সকল শ্রেণির চাকরিতে রাখতে হবে। সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের যে সুপারিশ করা হয়েছে যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এই প্রতিবেদন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী। এই ধরনের প্রতিবেদনের মাধ্যমে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের অপমান করা হয়েছে। ‘তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরিতে কোটা থাকবে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা থাকবে না, সমাজে কোটার প্রয়োজন নেই’ মন্ত্রীপরিষদ সচিবের এই ধরনের বক্তব্য আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।

তিনি আরও বলেন, কমিটি যে প্রতিবেদন দিয়েছে তা কোনো কোটা সুবিধাভোগীদের সাথে কথা না বলে তাদের মনগড়া প্রতিবেদন দিয়েছেন ‍যা সংবিধানবিরোধী। কোটা সুবিধার প্রয়োজনীয়তা রাষ্ট্রে এখনও শেষ হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাস্তবায়ন করা রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব। তারা সচিবের সুপারিশ বাতিলের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে কোটা বাতিলের সুপারিশ বাতিলসহ চার দফা দাবি জানানো হয়। এগুলো হলো ৩০ শতাংশ কোটার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের জন্য বিসিএসসহ সকল চাকরি পরীক্ষায় প্রিলিমিনারি থেকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাস্তবায়ন করা, মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও তাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়া এবং প্রধানমন্ত্রী ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে কটূক্তিকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া।

মুক্তিযোদ্ধা কোটা ছাড়া অন্যান্য কোটার ব্যাপারে ‍তাদের অবস্থান জানতে চাইলে তারা অন্যান্য কোটাও বহাল রাখার পক্ষে বলে জানান। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার প্রসঙ্গে তারা বলেন, তারা কখনও হামলা করেননি হামলা ঠেকিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সহ সভাপতি মিজানুর রহমান পিকুল, শফিউল আলম রিয়াদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান প্রমুখ।