চামড়া শিল্প থেকে সরকারের আয় কমেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে এ খাতে আয় হয়েছে ১৮ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ কম। যদিও গত বছর এই সময়ে আয় ছিল অনেক বেশি। গেল অর্থবছরের (জুলাই-আগস্টে) এ খাতে আয় ছিল ২৪ কোটি ৮১ লাখ ডলার। তার মানে এই খাতটির আয়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে ২৬ দশমিক ২৬ শতাংশ। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ইপিবির তথ্য অনুসারে,চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের (জুলাই-আগস্ট) প্রথম দুই মাসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৮ কোটি ৯৭ লাখ ডলার। এ সময়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কমেছে ৬৭ লাখ ডলার।সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রফতানিমুখী খাত চামড়ায় দুর্দিন চলছে। যদিও এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম খাত। সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে চামড়াকে গত বছর বর্ষপণ্য ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। তাতে কাজ হয়নি। ক্রমেই কমছে চামড়া থেকে রফতানি আয়।ইপিবির সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশ থেকে প্রক্রিয়াজাত চামড়া, চামড়ার তৈরি জুতা বা পাদুকা এবং চামড়াজাত পণ্য যেমন- ব্যাগ, জ্যাকেট, হাতমোজা, ওয়ালেট, বেল্ট, মানিব্যাগ ইত্যাদি রফতানি হয়। এ তিন উপখাতের সব কটিতেই আয় কমেছে। এর মধ্যে প্রক্রিয়াজাত চামড়ায় ৩ কোটি ১০ লাখ ডলারের রফতানি লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ২ কোটি ৪৯ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৭.৪৯ শতাংশ কম। একইসঙ্গে এ আয় আগের বছরের একই সময়ের চেয়েও ৩২.৪২ শতাংশ কম। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে আয় ছিল ৩ কোটি ৩২ লাখ ডলার।

চামড়াজাত পণ্যে ৫ কোটি ৭৩ লাখ ডলারের রফতানি লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ৩ কোটি ১৭ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৪.৭০ শতাংশ কম। একইসঙ্গে আগের বছরের একই সময়ের চেয়েও ৬২.২৮ শতাংশ কম। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে আয় ছিল ৮ কোটি ৪১ লাখ ডলার।চামড়া খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দরপতন চলছে। ফলে এ খাত থেকে রফতানি আয় কমছে। এছাড়া সাভারে এখনও পরিবেশবান্ধব শিল্পনগরী গড়ে ওঠেনি। পরিবেশবান্ধব উৎপাদন ব্যবস্থা নিশ্চিত না করার কারণেই আমদানিকারকরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন, এতে কমছে রফতানি, ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে চামড়া শিল্প।চামড়ার পাদুকায় ১০ কোটি ১২ লাখ ডলারের রফতানি লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ১২ কেটি ৮৭ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৭ শতাংশ বেশি। তবে গেল অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় কমেছে ১.৫১ শতাংশ।রফতানিকারকরা বলছেন, বিশ্বে চামড়াজাত পণ্যের বাজার ২২ হাজার কোটি ডলারের বেশি। এ বাজারে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব খুবই কম। এ ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা পরিবেশগত ক্ষতি ও নেতিবাচক শ্রম পরিবেশ। তবে সরকারের নীতিনির্ধারকরাও এর প্রতি গুরুত্ব দিয়ে রাজধানীর হাজারিবাগ থেকে সাভারের চামড়া পল্লীতে ট্যানারি স্থানান্তর করেন। তবে ২০০৩ সালে সাভারের চামড়া শিল্পের কাজ শুরু হলেও সিইটিপি এখনও পুরোপুরি চালু করা সম্ভব হয়নি।