মিয়ানমারের সার্বভৌমত্ত্বে হস্তক্ষেপ করার কোনো অধিকার জাতিসংঘের নেই বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং। রোববার একটি অনুষ্ঠানে সেনা সদস্যদের উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে তিনি এমন মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী পরিচালিত পত্রিকা মিয়াওয়াদি। এই বেপরোয়া মন্তব্যই জাতিসংঘের গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশের পর বর্মি সেনাপ্রধানের জনসম্মুখে দেখানো প্রথম প্রতিক্রিয়া। ওই প্রতিবেদনে সেনাপ্রধানসহ মিয়ানমারের উচ্চপদস্থ কয়েকজন সেনা কর্মকর্তাকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) মুখোমুখি করার আবেদন জানানো হয়।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনের জবাবে রোববার অং হ্লাইং বলেন, কোনো দেশ, সংগঠন বা দলের অধিকার নেই যে তারা অন্য একটি দেশের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করে তা লঙ্ঘন করে কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেবে। ‘অভ্যন্তরীণ বিষযে নাক গলানো নিয়ে কথাবার্তা বলা হলে তা ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করতে পারে,’ বলেন তিনি।

প্রকাশের পরই জাতিসংঘের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করে মিয়ানমার সরকার। এরপর জাতিসংঘের আবেদন আমলে নিয়ে ৬ সেপ্টেম্বর আইসিসি মিয়ানমারের বিচার করার পক্ষে মতামত দিয়ে এক বিবৃতি দিলে সেটিও ‘দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান’ করে মিয়ান সরকার বলেছিল, এ ইস্যুতে আইসিসির হস্তক্ষেপ করার কোনো এখতিয়ার নেই।

কিন্তু তারপরও গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেন আইসিসি। নেদারল্যান্ডসের হেগে গঠিত ওই আদালতের এক আইনজীবী এক বিবৃতিতে বলেন, লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে যেভাবে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে বিতাড়িত করা হয়েছে, তাতে যুদ্ধাপরাধ বা মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি না, সে বিষয়ে প্রাথমিক তদন্ত হাতে নিয়েছেন আদালত।