প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে সচিব কমিটির সুপারিশের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব আগামী মন্ত্রিসভার বৈঠকে উঠবে। আজ বুধবার কোটা পর্যালোচনা কমিটির মুখপাত্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (বিধি) আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘কোটা নিয়ে কমিটির দেওয়া সুপারিশ প্রধানন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আমাদের কাছে এসেছে। মন্ত্রিসভা বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য আমরা তা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়ে দিয়েছি। আশা করছি আগামী মন্ত্রিসভা বৈঠকে সেটি অনুমোদনের জন্য উঠবে।’

সচিব বলেন, ‘আমরা জাস্ট সুপারিশটাই মন্ত্রিসভা বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য পাঠিয়েছি। সেখানে নতুন করে কিছু যুক্ত করা হয়নি। এখন মন্ত্রিসভা যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটার ওপর ভিত্তি করেই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।’

সরকারি চাকরির নবম থেকে ত্রয়োদশ গ্রেড পর্যন্ত অর্থাৎ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে কোনো কোটা না রেখে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের নিয়ম চালু করতে গত ১৭ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের নেতৃত্বে গঠিত কোটা পর্যালোচনা কমিটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সুপারিশ জমা দেয়। ওই কমিটির সুপারিশ প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়ায় তা এখন মন্ত্রিসভা বৈঠকে উঠবে।

প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে যোগ দিয়ে নিউ ইয়র্কে রয়েছেন। আগামী ১ অক্টোবর সকাল ৯টায় তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। ওই দিন মন্ত্রিসভা বৈঠক না হলে ৮ অক্টোবর হবে।

বর্তমানে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত রয়েছে। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ ও প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ।

সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবিতে কয়েক মাস আগে জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। তাদের সেই আন্দোলন ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে।

আন্দোলন দানা বাধার প্রেক্ষাপটে সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের নেতৃত্বে গত ২ জুন একটি কমিটি করে সরকার। শফিউল আলম গত ১৩ অগাস্ট সাংবাদিকদের জানান, তারা সরকারি চাকরির কোটা ‘যতটা সম্ভব’ তুলে দিয়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের সুপারিশ করবেন। আর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য কোটার বিষয়ে যেহেতু আদালতের রায় আছে, সেহেতু এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের মতামত নেওয়া হবে।

সব কাজ শেষে সুপারিশ জমা দেওয়ার কথা জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের ফাইন্ডিংস অনেক ছোট, তবে রিপোর্ট অনেক বড়, আমরা আইন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়েছি। তারা বলেছে, এটি সরকারের পলিসি ডিসিশন, কোনো সমস্যা নেই।’