ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বিএনপিপন্থি বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ বলেছেন, নির্বাচনে ইভিএম ভোট কারচুপির মাধ্যম। পৃথিবীর কোনো দেশেই ইভিএম গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। তাই নির্বাচনের আগে তাড়াহুড়ো করে ইভিএম কেনা দুরভিসন্ধিমূলক। বুধবার (২৬ সেপ্টেম্ব) দুপুরে দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’ আয়োজিত ‘ইভিএম বর্জন: জাতীয় নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আগামী নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, সংসদ না ভেঙে নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই। ২০১৪ সালের নির্বাচন সম্পূর্ণ অবৈধ।বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার মধ্য থেকে যারা নির্বাচনে অংশ নেবেন তারা যেন নিরপেক্ষ হন। ঐক্য প্রক্রিয়া সারা দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে হবে। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনের দাবিতে আওয়ামী লীগ নত না হওয়ায় এখন বিএনপিকে শেষ অস্ত্র ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ।তিনি বলেন, আন্দোলন হল শেষ মুহূর্তের অস্ত্র, এই অস্ত্র ব্যবহারের সময় এসে গেছে।

নির্দলীয় সরকারের অধীনে না হওয়ায় বিএনপি দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিল, তখন তারা দাবি আদায়ে আন্দোলনও করেছিল, কিন্তু ফল আসেনি। পরের বছর ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটাতে টানা তিন মাস হরতাল-অবরোধ করেও সফল হয়নি দলটি।একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে আবারও নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি তুলেছে বিএনপি; এই দাবিতে নিজেদের জোটের বাইরে আরও কয়েকটি দলকেও পাশে পেয়েছে তারা।তবে আন্দোলনের হুমকির জবাবে তাদের অতীতের ব্যর্থতার দিকটি তুলে ধরে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিএনপির আন্দোলনের সামর্থ্যই নেই।

তবে এমাজউদ্দীন মনে করেছেন, বিএনপির সঙ্গে কামাল হোসেন ও এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায়ও সরকারের বিরুদ্ধে নামায় এবার পরিস্থিতি ভিন্ন।তা দেখে ক্ষমতাসীন দল ‘ভীত-সন্ত্রস্ত’ হয়ে গেছে দাবি করে তিনি বলেন, ঐক্য প্রক্রিয়া ৮৮ হাজার গ্রামে ছড়িয়ে দিতে হবে। এই জন্য তরুণদেরকে সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে।খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গ ধরে আশাবাদী কণ্ঠে এমাজউদ্দীন বলেন, ৭৩ বছরের ভদ্র মহিলাকে বাসযোগ্য নয়, এমন একটি কারাগারে রাখা হয়েছে। সেখানে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না।সময় ঘনিয়ে আসছে, তিনি তার ইচ্ছামতো জায়গাতে চিকিৎসা করাবেন।রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এই শিক্ষক জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবি জানান। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবিও জানান তিনি।পাশাপাশি ইভিএম বাতিল করে নির্বাচনে সেনাবাহিনীর কর্তৃত্ব আরও বাড়ানোর দাবি জানান এমাজউদ্দীন।সামরিক কর্মকর্তাদের পোলিং সেন্টারের কর্তৃত্ব দিতে হবে।বিএনপি এসব দাবি জানিয়ে আসছে। তবে তা প্রত্যাখ্যান করে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রেখেই নির্বাচন হবে এবং তাতে কেউ অংশ না নিলে তাদের করার কিছু নেই।