ছয় লাখ ৭৭ হাজার ৫৬ পিস ইয়াবার বিশাল চালানসহ রোহিঙ্গা উখিয়ার আলমসহ তার সহযোগী টেকনাফের ইব্রাহিম র‌্যাবের হাতে গ্রেফতারের ঘটনায় সাগরপারের কুয়াকাটাসহ কলাপাড়ার গোটা উপজেলায় তোলপাড় চলছে।এ ঘটনায় শনিবার রাতে কলাপাড়া থানায় মামলা হয়েছে। র‌্যাব-৮ বরিশালের ডিএডি আমজাদ হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন। গ্রেফতার দুই কারবারিকে রবিবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত ভোররাতে কলাপাড়া পৌরশহর ঘেঁষা শেখ কামাল সেতুর টোল পয়েন্ট এলাকায় র‌্যাব-৮ এর অভিযানিক দল ইয়াবার এই বিশাল চালান আটক করে।

সাগরপথে টেকনাফ থেকে ট্রলারযোগে মাদকের এই বিশাল চালান আলীপুর-মহিপুরে আনলোড হয়ে সড়কপথে ঢাকাসহ বিভিন্ন রুটে চালান করছিল। বিদেশী অস্ত্রসহ বিভিন্ন ধরনের অবৈধ মালামাল এই রুটে আসার শঙ্কাও করছেন প্রশাসনসহ সাধারণ মানুষ। র‌্যাবের অভিযানে এ চক্রের ব্যবহৃত প্রাইভেট কার, একটি বিদেশী পিস্তল, দুইটি ম্যাগজিন, চার রাউন্ড গুলি, চারটি মোবাইল সেট, চারটি সীমকার্ড ও নগদ ১৯৭৫ টাকা উদ্ধার হয়। এঘটনার পর কুয়াকাটা, আলীপুর, মহিপুরসহ কলাপাড়ার মাদকের গডফাদাররা অনেকটা সন্তর্পনে চলাচল করছে। কার ট্রলারে কিংবা কে জড়িত, এনিয়ে চলছে বিভিন্ন ধরনের গুঞ্জন। এ চক্র র‌্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকান্ডের প্রতি নজরদারি চালাচ্ছে বলেও জনশ্রুতি রয়েছে। কুয়াকাটা-আলীপুর-মহিপুরের অসংখ্য মানুষের দাবি ৮ আগস্ট রাতে কুয়াকাটার খাজুরায় ৪৪৫ পিস ইয়াবাসহ পুলিশ কারবারি শাকিল কে আটক করে। ওই ইয়াবা ছিল কথিত স্বঘোষিত সরকার দলীয় ক্যাডার একাধিক মামলার আসামি সশস্ত্র সন্ত্রাসী সোহেল খাঁ।

তখন সোহেল খাঁসহ জড়িতদের নামে মামলা করে পুলিশ। মামলার পরের রাতে সোহেল খাঁর সৌজন্যে আলীপুর-কুয়াকাটায় টানানো সকল ব্যানার ফেস্টুন রাতের আধারে উধাও হয়ে যায়। গাঁঢাকা দেয় সোহেল খাঁ। অন্তত চারটি মামলার আসামি সোহেল খাঁ আলীপুরের মুর্তিমান আতঙ্ক থাকলেও পুলিশ তখন গ্রেফতার করেনি। তার মাদক কারবার চলত ফ্রি-স্টাইলে। এই সোহেল খাঁ গ্রেফতার হলে বের হয়ে আসবে ওই এলাকায় মাদকের গডফাদার কারা। সাগরপথের বিশাল ইয়াবার চালান কাদের। কারা জড়িত। সাগরপথে ইতোপুর্বেও মাদকের একাধিক চালান আসে। কলাপাড়ায় ৭৪টি রোহিঙ্গা পরিবারের বসবাস। যার মধ্যে আলীপুরে বসবাস অন্তত ৬০ পরিবারের। এদের গডফাদার কারা। এসব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে এখন। কয়েক বছর আগেও রোহিঙ্গা ফজল করিম ছিল আলীপুরের আতঙ্ক। দিনে রামদার মহড়া দিত। হঠাৎ প্রায় তিন ফজল করিম উধাও। জনশ্রুতি রয়েছে বালু উত্তোলন ও ভরাট বাণিজ্যের বিরোধে ফজল করিম মালয়েশিয়া চলে গেছে। যেন এসব ঘটনা চলে আসছে আলোচনায়। ইয়াবার এতো বড় চালান আগে আর এই জনপদে আটক হয়নি। তাই সাধারণ মানুষের মনে নানান প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি স্বস্তিও ফিরেছে র‌্যাবের সফল অভিযানের খবরে।