বাংলাদেশের অনন্য দর্শনীয় স্থান সেন্টমার্টিন দ্বীপপুঞ্জকে নিজেদের বলে দাবি করার পর বাংলাদেশের প্রতিবাদের মুখে ওই ভুয়া তথ্য সরিয়ে নিয়েছে মিয়ানমার। রোববার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ২০তম বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শহীদুল হক এ তথ্য জানান।বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে এ বিষয়ে জোর প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এরপর তারা তাদের ওয়েরসাইট থেকে এটি সরিয়ে ফেলেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি ডা. দীপু মনি বৈঠক শেষে বলেন, এটি একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা। কমিটি এ বিষয়ে তৎপর থাকার এবং ওই দেশের অন্য কোনো ওয়েবসাইটে কিংবা অন্য কোথাও এ ধরনের তৎপরতা রয়েছে কিনা তা মনিটর করার সুপারিশ করে।প্রসঙ্গত, মিয়ানমার সরকারের জনসংখ্যাবিষয়ক বিভাগের ওয়েবসাইট সম্প্রতি তাদের দেশের যে মানচিত্র প্রকাশ করেছে, তাতে সেন্টমার্টিনকে তাদের ভূখণ্ডের অংশ দেখানো হয়।ওই মানচিত্রে মিয়ানমারের মূল ভূখণ্ড এবং বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের অন্তর্গত সেন্টমার্টিনকে একই রঙে চিহ্নিত করা হয়। অন্যদিকে বাংলাদেশের ভূ-ভাগ চিহ্নিত করা হয় অন্য রঙে। এ সময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, মিয়ানমার যদি এমন আপত্তিজনক কাজ চালিয়ে যেতে থাকে তবে বাংলাদেশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।

এদিকে সংসদ সচিবালয় পাঠানো প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে সদ্য শেষ হওয়া জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ সম্পর্কে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপের বিবরণ উপস্থাপন করা হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের বিস্ময়কর অগ্রগতিতে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের অবস্থান ও বিশ্বে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি সম্পর্কে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের বিভিন্ন ইতিবাচক মন্তব্য তুলে ধরা হয় এবং বাংলাদেশ যাতে এভাবে এগিয়ে যায় সেজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করা হয়। বৈঠকে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের নেতিবাচক অপপ্রচার মোকাবেলায় সার্বক্ষণিক তৎপর থাকতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়।কমিটির সভাপতি ডা. দীপু মনি বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক কমিটির সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, মুহাম্মদ ফারুক খান, সেলিম উদ্দিন এবং বেগম মাহজাবিন খালেদ অংশগ্রহণ করেন। বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শহীদুল হক ছাড়াও মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব মো. খুরশেদ আলমসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।